মুম্বই: নাবালিকা যৌন নিগ্রহ মামলায় বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের একটি পর্যবেক্ষণ ফের স্তম্ভিত গোটা দেশ৷ বৃহস্পতিবার বম্বে হাইকোর্টের একটি পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘কোনও নাবালিকার হাত ধরা এবং তার প্রেক্ষিতে প্যান্টের চেন খোলার ঘটনাকে যৌন নিগ্রহের পসকো আইনের আওতায় ফেলা যাবে না৷’’ নাগপুর বেঞ্চের আর পর্যবেক্ষণ, এই ধরণের ঘটনাকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪(এ) ধারায় যৌন নিগ্রহের আওতাভুক্ত করা যাবে না৷
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তির একটি পাঁচ বছরের নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে যৌন নিগ্রহের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ২৫০০০ টাকার জরিমানার সাজা শোনায় জেলা আদালত। পরে এই মামলা বম্বে হাইকোর্টের দরজায় পৌঁছালে বিচারপতি পুষ্প গনেদিওয়ালা’র নেতৃত্বে সিঙ্গেল বেঞ্চ অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির দোষকে পসকো আইনের ৮,১০ এবং ১২ নম্বর ধারার বাইরে রেখে তার সাজা কমিয়ে ৩ তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং এই ঘটনাকে ‘যৌন নিগ্রহ’ নয় বলে পর্যবেক্ষণে জানায় নাগপুর বেঞ্চ।
কয়েকমাস আগে যৌন নির্যাতনের ঘটনার একটি অভিযোগ দায়ের করে নিগ্রহিত নাবালিকার মা। ৫ বছরের নাবালিকার মা তার অভিযোগে স্পষ্ট উল্লেখ করেন, বছর পঞ্চাশের অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি তার মেয়ের স্তনে হাত দেয় এবং তাকে বিছানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যত হয়। তিনি আরো বলেন যে, ওই প্রৌঢ় ব্যক্তিকে তিনি প্যান্টের চেন খোলা অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় থানায়। এই মামলাকে বিচারপতি পুষ্প গনেদিওয়ালার বেঞ্চ পসকো আইনের ৭ নম্বর ধারায় বিচার শুরু করেন৷ যেখানে বলা হয়েছে, ‘‘কোনও ব্যক্তি যদি কোনও নাবালিকার গোপনাঙ্গ স্পর্শ করে বা স্পর্শ করতে বাধ্য করে, তাহলে সেই স্পষ্টতভাবে যৌন নিগ্রহের ঘটনা৷’’ কিন্তু এই ঘটনায় ‘সরাসরি ত্বক সংস্পর্শ হয়নি’ বলে তাকে পসকো আইনের বাইরে রেখেই গত ১৯ জানুয়ারি রায়দান করে বম্বে হাইকোর্ট৷ এই রায়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়, “ত্বকে-ত্বকে সংস্পর্শ না হলে তাকে পসকো আইনের আওতায় এনে বিচার করা যাবেনা৷” এই রায়ের বিরোধিতা করে দেশের মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে সরব হলে এটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল এই মামলার রায়কে ‘বিপজ্জনক’ আখ্যা দিয়ে সেটিকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যান৷ যেখানে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এই মামলার উপর ‘স্থগিতাদেশ’ দেন৷