বেঙ্গালুরু: দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতি কতটা প্রতিকূল, তা বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে নানা ঘটনাই। রোজই সংবাদমাধ্যমে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ঘরনের খবর প্রকাশিত হচ্ছে৷ সেরকমই একটি ঘটনা সামনে এল৷ এক দৃষ্টিক্তিহীন তরুণ শাবাজ পাঁচ দিন ধরে বৃদ্ধ বাবার জন্য আইসিইউ ওয়ার্ডে শয্যা খুঁজেছেন বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন হাসাপাতালে ঘুরে ঘুরে৷ তাঁর বাবার অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ নামছিল৷ চিকিৎসক আশঙ্কা করেন, শামিম আখতার নামে ওই ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত৷ কিন্তু তাঁরা এতটাই দুঃস্থ যে তাঁদের পক্ষে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করানোও সম্ভব হয়নি৷
শাবাজের দৃষ্টিশক্তি না থাকা সত্ত্বেও, সেই শারীরিক প্রতিকূলতাকে জয় করে বাবার জন্য আইসিইউতে একটি শয্যা জোগাড় করতে তাঁকে নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে হাসপাতালের দরজায় দরজায় কড়া নেড়েছেন তিনি৷ কিন্তু সব জায়গা থেকেই মধ্য কুড়ির এই তরুণ শাবাজকে ফিরে আসতে হয়েছে খালি হাতে৷ শেষ পর্যন্ত রবিবার ইন্দিরানগরের একটি হাসপাতালে আইসিইউ ওয়ার্ডে শয্যা পেয়েছেন এবং বাবাকে ভর্তি করেছেন তিনি৷ অসুস্থ শামিম আখতার শাড়িতে এম্ব্রয়ডারির কাজ করেন৷ গত কয়েক দিন ধরেই তিনি জ্বর এবং সর্দি কাশি নিয়ে ভুগছিলেন৷ বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়েছিল৷ কিন্তু বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করেন তাঁর ছেলে শাবাজ৷ তিনি জানান, গত কয়েক দিন ধরে তিনিই মাইসুরু রোডে তাঁদের এক চিলতে বাড়িতে অসুস্থ বাবা এবং অশক্ত মায়ের সেবাযত্ন করছিলেন৷ কিন্তু বাবার অক্সিজেন মাত্রা আশি শতাংশের নীচে নেমে যাওয়ায় তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে শয্যা খুঁজতে শুরু করেন৷
সব জায়গা থেকেই খালি হাতে ফিরলেও, হাল ছাড়েননি শাবাজ৷ অবশেষে বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরে কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়েছেন তিনি৷ এক কোভিড-স্বেচ্ছাসেবী জানিয়েছেন, বেশ কিছু সংস্থার কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করা হয়েছিল৷ কিন্তু কোনও লাভ হয়নি৷ তবে বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও শাবাজের দৃষ্টিহীন চোখে আশার আলো এখনও নেভেনি৷