নয়াদিল্লি: ‘ট্রেন্ড’ পাল্টাচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন সাংবিধানিক পদে বসানো হচ্ছিল ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা অথবা দলের ঘনিষ্ঠদের। আবারও তাই ঘটল। জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল হিসাবে চেয়ারে বসলেন বিজেপি নেতা মনোজ সিনহা। এক সময়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের রেল প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন মনোজ।
আরও পড়ুন: অভিশপ্ত বিমানের ককপিটে ছিলেন অভিজ্ঞ পাইলট, জীবন দিয়ে রুখেছেন ভয়ঙ্কর বিপদ
বিজেপির মতে, জম্মু-কাশ্মীরের দলগুলির সঙ্গে আলাপ আলোচনার দিকে গত এক বছরে আস্থা হারিয়েছে সরকার। ফলে সেই সমস্যার সমাধান করতেই মনোজ সিনহার মতো সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ নেতাকেই সামনে আনা হয়েছে। বিজেপির তরফে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে ওই পদে থাকা গিরিশচন্দ্র মুর্মু একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে সিএজি প্রধান করার কথা ঘোষণা করেছে শাসক দল। বিরোধীরা দাবি করেছে, সিএজি থেকে কেউ যাতে সরকারের বিরুদ্ধে কথা না বলতে পারে তার জন্যেই মুর্মুর মতো আস্থাভাজনকে সেখানে সামনে আনা হয়েছে।
৫ আগস্ট কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের এক বছর পূরণ হয়েছে। এদিন রামমন্দিরের শিলান্যাস অনুষ্ঠান নিয়ে সবাই যখন ব্যস্ত তখনই গুজরাট ক্যাডারের আমলা গিরিশ্চন্দ্র মুর্মু নিজের ইস্তফা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় ওই ইস্তফা গ্রহণ করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় মনোনয়নে মনোজ সিনহাকে পরবর্তী উপরাজ্যপাল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০১৭ সালের উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের পর মনোজকে মুখ্যমন্ত্রী করার কথা হয়েছিল, এমনকী মনোজকে শপথ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু সঙ্ঘের চাপে যোগী আদিত্যনাথকেই সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাতে হতাশ হলেও মনোজ দলের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলেননি। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে হেরে গিয়ে জাতীয় রাজনীতি থেকে নিজেকে কিছুটা দূরেই সরিয়ে নিয়েছিলেন মনোজ। কিন্তু এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর তিনি শ্রীনগর পৌঁছেছেন।
আরও পড়ুন: সুখবর: ভারতকে ১০ কোটি করোনা টিকা দেবে গেটস ফাউন্ডেশন, জানাল সিরাম ইনস্টিটিউট
অন্যদিকে মোদী ঘনিষ্ঠ মুর্মু প্রথমে গুজরাত ও পরে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ মন্ত্রকের সচিব হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন। অবসরের পর জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল পদে বসেন মুর্মু। কিন্তু তারপর একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সেখানে সম্প্রতি বিধানসভা আসনের পুনর্বিন্যাসের কাজ শুরু হয়েছে। মুর্মু বলেছিলেন, পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ হলেই বিধানসভা নির্বাচন শুরু হবে। এর সমালোচনা করে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোট কবে হবে সেটা একমাত্র নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে, এক্ষেত্রে উপরাজ্যপালের কিছু বলার এক্তিয়ার নেই। বিরোধীদের দাবি, কাশ্মীরে রাজনৈতিক আলোচনার জন্য কোনও পরিসর নেই। কারণ সেখানে এক বছর ধরে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা গৃহবন্দি। এই ঘটনাকে 'সাজানো নাটক' বলে অভিহিত করেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির কথায়, 'দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের পতনের পিছনে সিএজির মদত ছিল কিনা তা ভবিষ্যতে স্পষ্ট হবে। সেই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তাই মুর্মুকে সামনে এনে বিরোধিতার জায়গা বন্ধ করে দিতে চাইছে বিজেপি সরকার।'