‘মোহন ভাগবতকে সন্ত্রাসবাদী বলা হবে যদি…’ গেরুয়া শিবিরকে নিশানা রাহুলের

‘মোহন ভাগবতকে সন্ত্রাসবাদী বলা হবে যদি…’ গেরুয়া শিবিরকে নিশানা রাহুলের

 

নয়াদিল্লি:  কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবি জোরদার করতে রাইসিনা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে মোদী সরকার ও সংঘ পরিবারকে এক বন্ধনীতে ফেলে  কটাক্ষ করলেন রাহুল গান্ধী৷ দেশে গণতন্ত্র নেই বলে অভিযোগ করে কংগ্রেসের ‘যুবরাজে’র মন্তব্য, ‘‘দেশে কেউ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধাচারণ করলেই তাঁকে জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হচ্ছে৷’’ কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি বিলের বিরুদ্ধে এদিন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের সুযোগসন্ধানী পুঁজিপতিদের মুলধন বৃদ্ধিতে সাহায্য করছেন। যেই তাঁর বিরুদ্ধে যাবেন, তাঁকেই সন্ত্রাসবাদী বলা হবে, তিনি কৃষক হতে পারেন, শ্রমিক হতে পারেন, অথবা সর সংঘ চালক মোহন ভাগবতও হতে পারেন।’’ রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘ভারতে কোনও গণতন্ত্র নেই। যদি আপনারা কেউ ভেবে থাকেন, গণতন্ত্র রয়েছে, তাহলে সেটা আপনাদের কল্পনা।’’

এদিন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেন রাহুল গান্ধী, গুলাম নবি আজাদ, অধীররঞ্জন চৌধুরীরা। কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবি তুলে দেশের সাংবিধানিক প্রধানকে সাম্মকলিপি জমা দেন কংগ্রেস নেতারা। আইনটি নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদে যৌথ অধিবেশন ডাকারও দাবি তুলেছে কংগ্রেস। এদিন ২৪ আকবর রোডের বাইরে একটি ধরনা প্রদর্শন করেন কংগ্রেস নেতাকর্মীরা। রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত মিছিল করে তাঁদের যাওয়ায় বাধা দেয় পুলিশ। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সহ অন্যান্য কংগ্রেস সাংসদ ও নেতারা তাঁদের কার্যালয়ের বাইরে ধরনায় বসেন। বিধিনিষেধ ভঙ্গ করার অভিযোগে তাঁদের আটক করে দিল্লি পুলিশ। যদিও রাষ্ট্রপতি ভবন সহ কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে দিল্লি পুলিশে। ফলে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার অভিযোগে তাঁদের আটক করা হয়। কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি জমা দেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘আমরা তিনজন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম, আমরা দু’কোটি কৃষকের স্বাক্ষরের নথি তুলে দিয়ে কৃষকদের কথা তুলে ধরেছি।’’ সনিয়া-পুত্র আরও বলেন, “আমরা রাষ্ট্রপতিকে বলেছি, এই আইনগুলি কৃষক বিরোধী। এর ফলে কৃষক এবং শ্রমিকদের ভোগান্তি হবে। সরকার বলেছে, এই আইন কৃষকদের সুবিধার্থে, তবে দেশ দেখতে পাচ্ছে, কৃষকরাই এই আইনের বিরুদ্ধে।”

রাহুল গান্ধীর আশঙ্কা, এই আইন লক্ষাধিক কৃষকের রুজি কেড়ে নেবে এবং সুবিধা দেওয়া হবে চার থেকে পাঁচজন সুবিধাবাদী পুঁজিপতি ব্যবসায়ীকে। তিনি বলেন, “যেটা দেশের যুব এবং প্রত্যেক মানুষের জানা দরকার সেটা হল, প্রধানমন্ত্রী একজন অযোগ্য ব্যক্তি, যিনি কিছুই জানেন না। তিনি একজন অযোগ্য ব্যক্তি, যিনি শুধুমাত্র সুবিধাবাদী পুঁজিপতিদের কথা শোনেন। তাঁরা যা বলেন, তিনি সেটাই করেন।” রাহুল গান্ধির কথায়, “এখন কৃষক এবং শ্রমিক ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও, যাঁরাই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাঁদেরকেই জাতীয়তাবাদ বিরোধী এবং সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়া হচ্ছে। এটা দুঃখজনক, তবে আজ দেশে এমনটাই হচ্ছে। মানুষের কণ্ঠস্বর চাপা দেওয়া হচ্ছে৷” কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বলেন, “আমরা গণতন্ত্রে বাস করছি এবং তাঁরা নির্বাচিত সাংসদ। তাঁদের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার অধিকার আছে এবং তাঁদের অনুমতি দেওয়া উচিৎ। এরমধ্যে কী সমস্যা রয়েছে?সরকার সীমানায় বসে থাকা লক্ষাধিক কৃষকের কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।” ২৬ নভেম্বর দিল্লির বিভিন্ন সীমানা এলাকায় অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন কৃষকরা। কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাঁদের এই দরনা কর্মসূচী চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। প্রয়োজনে একবছর ধরেই এই অবস্থান চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কৃষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + seventeen =