বাড়ছে বিদ্রোহ, কৃষি বিলের পক্ষে দেশজুড়ে প্রচার নামছে বিজেপি

বাড়ছে বিদ্রোহ, কৃষি বিলের পক্ষে দেশজুড়ে প্রচার নামছে বিজেপি

বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকারের আনা কৃষি বিলের বিরুদ্ধে অনড় অবস্থানে থেতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কৃষক সংগঠনগুলি। “সর্বনাশা” এই বিলটি প্রত্যাহার চালিয়ে যাওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আজও একাধিকবার কৃষক নেতাদের আন্দোলনের পথ থেকে সরে এসে আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে তারমধ্যেই কৃ-ষি বিল নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাওয়ারও কৌশল নিয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী কয়েকদিনে, ১০০টি সাংবাদিক সম্মেলন এবং দেশের ৭০০টি জেলায় কৃষকদের সঙ্গে ৭০০টি বৈঠকের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, কৃষি বিল নিয়ে এই প্রচারপর্বে অংশ নেবেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রীরাও। তাঁদের মাধ্যমেই কৃষক সংগঠনগুলির তোলা ইস্যুগুলিও সামনে আনা হবে।  কৃষি বিল নিয়ে প্রচারপর্বে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের জবাবও দেওয়া হবে বলে বিজেপি সূত্রের খবর।

এদিকে, শুক্রবার কেন্দ্রের কৃষি বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন।  দিল্লি সীমানায় বিক্ষোভরত কৃষকরা ‘রেল রোকো’রও ডাক দিয়েছেন, যা খুব দ্রুতই কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। কোনও আলোচনা ছাড়াই এই আইন খেয়ালখুশি মতো পাস করানো হয়েছে অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। সেপ্টেম্বরে বাদল অধিবেশনে পাস করানো হয় কৃষি সংক্রান্ত তিনটি বিল। এই বিলকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে নোটিশ পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত।

তবে এসবের মধ্যে শুক্রকবারও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর জানিয়েছেন, আলোচনার জন্য প্রস্তুত সরকার। একইসঙ্গে কৃষকদের ‘সাধারণ মানুষের স্বার্থে’ আন্দোলন থামিয়ে আলোচনার পথে সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কৃষি বিলের কয়েকটি সংশোধনী খসড়়াও পাঠানো হয়েছে কৃষকদের কাছে, যদিও তার কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি বলেও এদিন জানিয়েছে নরেন্দ্র সিং তোমর। তাঁর কথায়, “তাঁদের বিক্ষোভ প্রত্যাহার করা উচিৎ এবং আলোচনার পথে আসা উচিৎ”। কৃষকদের তরফে, কেন্দ্রের পাঠানো প্রস্তাবের উত্তর না আসা নিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয়, একটা সমাধান বের করা হবে। আমি আশাবাদী। আমি কৃষক ইউনিয়কে বলব আন্দোলন প্রত্যাহার করতে। সরকার তাদের একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। যদি আইনের কোনও অংশ নিয়ে আপত্তি থাকে, তাহলে তা নিয়ে আলোচনা হবে।”

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পাঠানো খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বেসরকারি মাণ্ডিগুলির রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু করতে পারবে রাজ্য সরকার, বাজার কমিটির আইনের আওতায়থাকা মাণ্ডির মতো বেসরকারি মাণ্ডিতেও একইভাবে সেস বা শুল্ক থাকবে, কৃষকদের থেকে ফসল কেনার আগে ব্যবসায়ী বা কর্পোরেট সংস্থআগুলিতে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। চুক্তিচাষের ক্ষেত্রে কৃষকদের জমিতে তৈরি করা পরিকাঠামো বন্ধক রেখে ঋণ নিতে পারবে না কর্পোরেট সংস্থাগুলি। নূন্যতম সহায়ক মূল্যে ফসল কেনার বিষয়ে লিখিত আশ্বাসেরও প্রস্তাব দেওয়া হয় খসড়ায়। যদিও ২০ পাতার এই খসরা বিকল্প প্রস্তাব মানতে নারাজ কৃষক সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, আইনটি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এবার তারই পাল্টা হিসেবে দেশব্যপি প্রচারের কৌশল বিজেপির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *