পাটনা: ভিন রাজ্য থেকে ফেরা হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের প্রথম আস্তানা এখন কোয়ারেন্টিন সেন্টার৷ সরকারি গাইডলাইন মেনে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের পর যে সকল শ্রমিকরা ঘরে ফিরে যাচ্ছেন, তাঁদের হাতে কন্ডোম এবং গর্ভনিরোধক ওষুধ তুলে দিচ্ছে বিহারের স্বাস্থ্য দফতর৷ রাজ্যের প্রতিটি কোয়ারেন্টিন সেন্টারে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷
পরিবার পরিকল্পনার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে৷ ২০১৬ সালের ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে অনুযায়ী আমাদের দেশের মধ্যে বিহারে জন্মের হার সবচেয়ে বেশি৷ মাথাপিছু প্রতি মহিলার ৩.৪টি শিশু রয়েছে৷ স্টেট হেলথ সোসাইটির এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর মনোজ কুমার বলেন, ‘‘মার্চ এবং নভেম্বরে হোলি, দিওয়ালি এবং ছট উপলক্ষে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরিযায়ী ঘরে ফেরেন৷ পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটান৷ দেখা গিয়েছে, মার্চ এবং নভেম্বরের ন’মাস পর রাজ্যে সবচেয়ে বেশি শিশুর জন্ম হয়৷ সে কারণেই আমরা কন্ডোম এবং গর্ভনিরোধক বড়ি বিতরণ করা শুরু করেছি৷’’ জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দিল্লি ও মুম্বই থেকে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে রাজ্যে ফিরেছেন প্রায় ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক৷ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী পায়ে হেঁটে বা ভাড়া গাড়িতে চেপে ফিরেছেন প্রায় ১০ লক্ষ পরিযায়ী৷
এই সকল শ্রমিকের হাতে কাজ না থাকায় রয়েছে প্রবল আর্থিক সংকট৷ এই সময় কন্ডোম বা গর্ভনিরোধক বড়ি কেনাও তাঁদের পক্ষে সম্ভব হবে না৷ তাই সরকারের পক্ষ থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এই প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক৷ কন্ডোম এবং গর্ভনিরোধক বড়ি বিলি করার দায়িত্ব সামলাচ্ছে স্টেট হেলথ সোসাইটি৷
এই কাজের দায়িত্ব থাকা বিহার স্টেস্ট হেলথ মনিটরিং-এর চিকিৎসক ডা. উৎপল দাস জানান, ‘‘ যেহেতু লক্ষ লক্ষ লোক রাজ্যে ফিরেছেন, তাঁদেরকে গর্ভনিরোধক বিতরণ করার মধ্য দিয়ে দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর সেই উদ্যোগ বাস্তবায়ণের জন্য আমরা আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের সহয়তা নিচ্ছি।” কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলিতে স্বাস্থ্যকর্মীরা দু’প্যাকেট করে কন্ডোম বিতরণ করছেন পরিযায়ীদের। অন্যদিকে আশা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে যাঁরা আছেন, তাঁদের কন্ডোমের প্যাকেট ও গর্ভনিরোধক ওষুধ দিয়ে আসছেন।