নয়াদিল্লি: আহত বাবাকে সাইকেলে বসিয়ে গুরুগ্রাম থেকে বিহারের দ্বারভাঙা পৌঁছনো ১৫ বছরের কিশোরী জ্যোতি কুমারীকে এখন এক ডাকেই চেনে দেশের মানুষ৷ বাবাকে সাইকেলে বসিয়ে ৭ দিনে ১,২০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে দ্বারভাঙার গ্রামে পৌঁছয় সে। এর পরেই ভারতীয় সাইক্লিং ফেডারেশন (সিএফআই) জানায়, জ্যোতিকে ট্রায়ালে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেবে তারা৷ কিন্তু, সেই প্রস্তাব আপাতত ফিরিয়ে দিলেন জ্যোতি৷
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জ্যোতি জানায়, আপাতত পড়াশোনা শেষ করতে চায় সে৷ জ্যোতি বলে, ‘‘পারিবারিক সমস্যার কারণে এর আগে স্কুলের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারিনি৷ লোকের বাড়িতে কাজ করতে হয়েছে৷ কিন্তু এখন সবার আগে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় পাশ করাই আমার লক্ষ্য৷’’ সে আরও জানান, এই দীর্ঘ পথের ধকলে আপাতত সে খুবই ক্লান্ত৷ শারীরিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েছে৷
অন্যদিকে, ভারতীয় সাইক্লিং ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ওংকার সিং পিটিআইকে জানিয়েছে, জ্যোতি ট্রায়ালে পাশ করলে দিল্লির আইজিআই স্টেডিয়ামে ন্যাশনাল সাইক্লিং অ্যাকাডেমিতে তাঁকে ট্রেনি হিসাবে নির্বাচিত করা হবে৷ ইতিমধ্যে জ্যোতির পড়াশোনার খরচের দায়িত্ব নিয়েছে লোক জনশক্তি পার্টি৷ তাঁর পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এলজেপি সভাপতি চিরাগ পাসওয়ান৷
জ্যোতির বাবা মোহন পাসওয়ান পিটিআইকে বলেন, “লকডাউন ওঠার পর আমরা অবশ্যই জ্যোতিকে পরীক্ষার জন্য পাঠাব। তবে গতকালই ও ক্লাস নাইনে ভর্তি হয়েছে। এই মুহূর্তে আমরা চাই সবার আগে জ্যোতি পড়াশোনাটা শেষ করুক৷ ম্যাট্রিক পাস করুক।”
কোভিড-১৯ প্যানডেমিক রুখতে লকডাউনের জেরে গুরুগ্রামে আটকে পড়েছিলেন জ্যোতি এবং তার বাবা মোহন পাসওয়ান৷ গুরুগ্রামে ই-রিক্স চালাতেন তিনি৷ কিন্তু লকডাউনে কাজ গিয়েছে তাঁর৷ হাতে তেমন টাকা পয়সাও ছিল না। আবার লকডাউনের আগেই একটি দুর্ঘটনার পর তাঁর বাম হাঁটুতে অস্ত্রোপচারও হয়৷ ঠিকভাবে হাঁটাচলাও করতে পারেন না তিনি৷ অন্যদিকে, টাকা না দিলে বাড়ি খালি করে দিতে হবে বলে হুমকিও আসছিল বাড়িওয়ালার কাছ থেকে৷ এই অবস্থায় ১৫ বছরের জ্যোতিই বাবাকে সাইকেলে চাপিয়ে গ্রামে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কাও জ্যোতির কথা টুইট করেছেন।