নয়াদিল্লি: কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিদ্রোহী কৃষকদের ডাকে আজ ভারত জুড়ে বনধ পালিত হচ্ছে৷ এই বনধকে সমর্থন জানিয়েছে ১১টি রাজনৈতিক দল, ট্রেড ইউনিয়ন, ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন, আইনজীবীদের ইউনিয়ন এবং ভারতীয় রেলওয়ের দুটি ইউনিয়ন৷ ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকা হলেও সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত চলবে কৃষকদের ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি৷ এই ‘প্রতীকী’ বনধে সামিল হওয়ার সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন কৃষক সংগঠনের নেতারা৷ তবে বনধের আগে পর্যন্ত তিনটি কৃষি বিলের সমর্থনেই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তাঁর কথায়, পুরনো আইন দেশের উন্নয়নের পথে ‘বোঝা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
আরও পড়ুন- ‘বিপ্লব হটাও, ত্রিপুরা বাঁচাও’, স্লোগান উঠল বিজেপির অন্দরেই
এদিকে রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিতে নিরাপত্তা জোড়াল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ কোভিড-১৯ গাইডলাইন যাতে মেনে আন্দোলন করা হয়, তা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে৷ ১৬টি রাজ্যে রেল অবরোধ করা হবে পারে বলে রেল কর্মীদের আগে থেকেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে৷ ভুবনেশ্বরে রেল অবরোধের খবর মিলেছে৷ মহারাষ্ট্রেও রেল রোখা হয়েছে৷ লখনউয়ে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা৷ বাংলাতেও বনধের প্রভাব পড়েছে৷ অধিকাংশ জায়গাতেই দোকানপাট বন্ধ৷ বাস চলাচলও স্বাভাবিক নয়৷ মধ্যমগ্রামে গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করা হয়৷ রেল অবরোধও করা হয়৷ যাদবপুর এলাকা প্রায় থমথমে৷ খড়গপুরেও বনধের ভালো রকম প্রভাব পড়েছে৷ হুগলীতেও বনধ চলছে৷ এদিন সকালে রিষড়াতেও রেল অবরোধ করা হয়েছিল৷ পড়ে অবশ্য তা উঠে যায়৷ শিয়ালদহ শাখার ডায়মন্ড হারবারেও চলছে অবরোধ৷
আজ ১১টা থেকে ৩টি পর্যন্ত দিল্লির বাইরে সকল টোলপ্লাজা অবরোধ করা হবে৷ তবে কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, তাঁদের ডাকা বনধ কোনও রাজনৈতিক দলের ডাকা বনধের মতো নয়৷ কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইট বলেন, ‘‘আমরা চার ঘণ্টার প্রতীকী বনধ করব৷ নীতিগত কারণেই আমাদের এই বনধ৷ এর জেরে সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখা আমাদেরই দায়িত্ব৷ এই সময়ের মধ্যে কেউ যাতে সফর না করেন সেই আহ্বান জানাব৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই সময়ের মধ্যে দোকানপাট বন্ধ রাখার আর্জিও জানাব আমরা৷’’ এই কর্মসূচি চলার সময় কৃষকদের শান্ত থাকার আর্জি জানিয়েছেন ভারতীয় কিষান একতা সঙ্ঘের সভাপতি জগজিৎ সিং৷ তবে বনধের সময় জরুরি পরিষেবা কোনও ভাবেই ব্যহত হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা৷ ভারতীয় কৃষক সংগঠনের তরফে রাকেশ টিকাইট বলেন, ‘‘আমাদের বিরোধিতা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে৷ ২-৩ ঘণ্টার এই বনধে যাঁরা আটকে পড়বেন তাঁদের জল ও ফল দেওয়া হবে৷ আমাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভিন্ন৷’’ কৃষকদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে শিল্পী মহল, ক্রিড়াবিদ, শ্রমিক এবং ছাত্র সংগঠনগুলিও৷
আরও পড়ুন- বিয়ের আসরে শিশুদের হাত সাফাই! ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ চক্রের পর্দাফাঁস
কেন্দ্রের সঙ্গে একাধিক বৈঠকেও মেলেনি সমাধান সূত্র৷ নিজেদের দাবিতে এক রোখা কৃষক নেতারা৷ কৃষকদের এই আন্দোলনকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস৷ পঞ্জাব, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড় এবং পুদুচেরীর প্রতি জেলায় বনধ পালন করার হবে বলে জানিয়েছে কংগ্রেস সরকার৷