নয়াদিল্লি: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার সেনা অবস্থান নিয়ে সোমবার দুই দেশের মধ্যে কোর কমান্ডার স্তরে দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা ধরে ম্যারাথন বৈঠক চলে৷ জানা গিয়েছে, হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে ইতিবাচক আলোচনা সম্পন্ন হয়৷ ওই বৈঠকেই সেনা পিছনোর বিষয়ে উভয় দেশ ‘ঐক্যমত্যে’ পৌঁছেছে বলে সেনা সূত্রে খবর৷ জানা গিয়েছে, পূর্ব লাদাখের বিতর্কিত অঞ্চল থেকে সেনা পিছনোর বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে চিন৷
২২ জুন চিনা এলাকা মলডোতে শুরু হয় এই ম্যারাথন বৈঠক৷ মলডোর বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ১৪ নম্বর কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং এবং চিনের পক্ষ থেকে বৈঠকে ছিলেন পিপলস লিবারেশন আর্মির দক্ষিণ শিনজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের মেজর জেনারেল লিন লিউ৷ বৈঠকেই এলএসি থেকে সেনা পিছনোর বিষয়ে সহমত জানায় দুই দেশ৷
সেনা পিছনোর পাশাপাশি এই আলোচনায় উঠে এসেছিল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর স্থায়ী বাঙ্কার ও রাস্তা তৈরির বিষয়টিও৷ এদিনের বৈঠকে এলএসি-তে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে চিন৷ প্রসঙ্গত, গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ এবং ১৫-র পাশাপাশি গোগরা উপত্যকার হট স্প্রিং এলাকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৭ এবং প্যাংগং লেকের উত্তরাংশে ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই স্থায়ী ও অস্থায়ী নির্মাণ কাজ সেরেছে চিন।
এর আগে, গত ৬ জুনও কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকের পর এলএসি থেকে সেনা পিছনোর বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুই দেশ৷ সেনা প্রধান এমএম নারাভানেও বলেছিলেন, গালওয়ান উপত্তকায় সেনা পিছনোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ১৫ জুন ভারতীয় সেনার উপর হামলা চালায় চিনের লাল ফৌজ৷ শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ৷ প্রাণ হারান ২০ ভারতীয় জওয়ান৷ ৪৫ বছর পর ফের রক্ত ঝরে ভারত-চিন-সীমান্তে৷ গতকালের বৈঠকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিং৷ উল্লেখ্য, এর আগে গত ৫ মে প্যাংগন টসো এলাকাতেও সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ভারত ও চিনা সেনা৷
এদিকে আজই সীমান্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে লাদাখ পৌঁছেছেন সেনাপ্রধান এমএম নারাভানে৷ তিনি গালওয়ানের ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্ট ঘুরে দেখবেন বলে সূত্রের খবর৷