আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্যুমিছিল, সমাধিস্থ করার জায়গা নেই

আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্যুমিছিল, সমাধিস্থ করার জায়গা নেই

 
লখনউ: করোনা আবহে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে (‌এএমইউ) মৃতদের সমাধিস্থ করার জায়গা নেই৷ এএমইউয়ের কবরস্থানটিতে কোথাও একটুও জায়গা অবশিষ্ট নেই৷ ফলে বাধ্য হয়ে করোনায় মৃতদের পুরোনো কবরস্থানে সমাধিস্থ করা হচ্ছে।

বিগত কয়েক সপ্তাহে এএমইউ ফ্যাকাল্টির বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত মিলিয়ে অন্তত ৩৫ জন সদস্য কোভিড ১৯ এবং এই ভাইরাসের মতো উপসর্গ নিয়ে মারা গিয়েছেন। রহস্যজনক প্রজাতি ও গত কয়েক সপ্তাহে ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর হার, এক বছরেও এএমইউ এত মৃত্যু দেখেনি। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শীর্ষ ফ্যাকাল্টি সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। শিক্ষাবিদদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেকেই একে ‘এএমইউ স্ট্রেইন’ বলে অ্যাখ্যা দিচ্ছে৷ অধ্যাপক মহম্মদ ওয়াসিম আলি বলেন, ‘গত ২০ দিনে,  ফ্যাকাল্টির ১৬ জন সদস্য আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে, যাঁদের মধ্যে ছিলেন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান, আই ফ্যাকাল্টির ডিন সহ আরও অনেক প্রসিদ্ধ শিক্ষক। এই ক্ষতির কথা ভাবলেই আতঙ্কে শিউরে উঠি এবং অস্থির হয়ে যাই।’

অধ্যাপক আলি আরও বলেন, ‘এএমইউ এই রহস্যজনক স্ট্রেইনের সঙ্গে পারছে না দেখে সহ-উপাচার্য তারিক মনসুর জেনোম সিক্যুয়েন্সিংয়ের জন্য আইসিএমআরকে চিঠি লিখেছেন। যাতে সব দিক দিয়েই খতিয়ে দেখা হয়।’ এক  স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ‘এই মৃত্যুমিছিলের দৃশ্য বেশ কিছু দশকে  আমার চোখে পড়েনি। আমি এখানে রোজ প্রার্থনা করতে আসতাম, অনেকেই তাঁদের প্রিয়জনদের জন্য প্রার্থনা করতে আসতেন৷ কিন্তু এখন আমি সপ্তাহে একদিন আসি। এখানকার পরিস্থিতিতে মানুষ ভীত। প্রতিদিন ৮-১০টি দেহ সমাধিস্থ হয় এখানে এবং একসঙ্গে নমাজ পড়া হয়।’

দ্বিতীয় করোনার ঢেউয়ে আলিগড়ে প্রায় ৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৯,১৭৯ জন কোভিড পজিটিভ। এমনকী, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এই শহরে ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল, কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে ২০ জনের মৃত্যুর পরই সংখ্যাটা বাড়ে। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং উপাচার্য তাঁর ফ্যাকাল্টির সদস্যদের টিকা নেওয়ার জন্য নিয়মিত আবেদনও করেছিলেন। যদিও অধ্যাপক ওয়াসিম নিশ্চিত করে বলেছেন যে মৃতদের মধ্যে খুব কমজনই টিকা নিয়েছিলেন। এমনকী বেশ কিছু অধ্যাপক টিকা নেওয়ার পরও হালকা উপসর্গ দেখা দিয়েছিল, যদিও তাঁরা সুস্থ হয়ে ওঠেন। এএমইউয়ের বর্তমান বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে কর্তৃপক্ষকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *