নিজে অসুস্থ, মুখে O2 নিয়ে করোনা রোগীদের পাশে আহমেদ ভাই!

নিজে অসুস্থ, মুখে O2 নিয়ে করোনা রোগীদের পাশে আহমেদ ভাই!

নয়াদিল্লি: নিজে অসুস্থ হয়েও করোনা পরিস্থিতিতে দেশের বেহাল অবস্থায় ঘরে বসে থাকতে পারেননি মনজুর আহমেদ৷ তিনি নিজে ক্রনিক অ্যাজমার রোগী৷ শ্বাসকষ্টে ভোগেন৷ বছর পাঁচেক ধরে অক্সিজেন তাঁর নিত্য সঙ্গী৷ বাড়িতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর নিয়ে থাকেন৷ বাইরে বেরোলে অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে নিয়ে যান৷ নিজের এহেন পরিস্থিতিতে থাকলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পিছপা হননি তিনি৷ দেশের এমন দুঃসময়ে মানুষের কাছে প্রাণবায়ু পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর তিনি৷

শুধু তাই নয়, নিজস্ব উদ্যোগে করোনা আক্রান্তদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন মনজুর আহমেদ৷ তিনি এখন ছোট মালবাহী গাড়ি চালিয়ে সংসার চালান। এখন সেই গাড়িতে করেই বিভিন্ন জায়গায় অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। কাশ্মীরের ৪৮ বছর বয়সী এই ব্যক্তি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বহুল চর্চিত। এখন তিনি পরিচিত ‘আহমেদ ভাই’ নামে৷

মনজুর আহমেদ জানান, ‘শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে কতটা কষ্ট হয় তা আমি জানি। আমার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। তাই টাকা নিয়েই বেশিরভাগ মানুষের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আমি মানুষের পাশে থাকতে চাই। আমি যে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতাম, করোনার জন্য তা হারিয়েছি। এখন এই গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাই৷ আমার ফোন নম্বর অনেক জায়গায় দেওয়া রয়েছে। করোনা রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলের জন্য অনেক ফোন আসে। তাদের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিতে সারাদিন ব্যস্ত থাকি। অনেক মানুষকে খাবার ও অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও পৌঁছে দিচ্ছি। যদিও অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য সবচেয়ে বেশি ফোন আসে। কত মানুষ অক্সিজেনের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে। তাদের সাহায্য করতে পারলে ভালো লাগে।’

তাঁর নিজের প্রতি মাসে ওষুধের জন্য খরচ প্রায় ছ’ হাজার টাকা। তার সঙ্গে তিন সন্তান ও স্ত্রীর জন্য দুবেলা দুমুঠো অন্ন জোগাড় করার দায়িত্বও রয়েছে কাঁধে। করোনা পরিস্থিতিতে কোনওভাবেই বাড়িতে বসে না থেকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান তিনি৷ দেশে এখন অক্সিজেনের ঘাটতি মেটানোই সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই সময় মনজুরদের মতো মানুষদেরই বেশি করে প্রয়োজন, যাঁরা নিজেরা অক্সিজেনের মূল্য অন্যদের থেকে অনেকটাই বেশি বোঝেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *