এই মহামারী আসলে একটা নতুন বিশ্বের প্রবেশদ্বার: অরুন্ধতী রায়

এই মহামারী আসলে একটা নতুন বিশ্বের প্রবেশদ্বার: অরুন্ধতী রায়

নয়াদিল্লি: করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে বিশ্ববাসী। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে কোভিড ১৯-এর জেরে। এই পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসের বিশ্বব্যাপী প্রকোপ নিয়ে মুখ খুলেছেন সাহিত্যিক অরুন্ধতী রায়। তাঁর কথায়, করোনা মহামারী আসলে পুরনোকে ভুলে নতুনকে গ্রহণ করার একটা পদ্ধতি। নতুন বিশ্বের প্রবেশদ্বার এটা।

গোটা বিশ্বে ছড়িয়েছে কোভিড ১৯। ভাইরাসটি দেশ, কাল, ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে আক্রমণ করছে। তথাকথিত বিশ্বের সবচেয়ে পরাক্রমশালী দেশ আমেরিকাও হার মানতে বাধ্য হয়েছে এর কাছে। সংক্রমণের ভয়ে তারা আগের অভ্যেসমতো রোগীদের হাসপাতালের বাইরেও ফেলে রাখতে পারছে না। লেখিকা আরও বলেন, ৩০ জানুয়ারি মাসে ভারতে প্রথম করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছিল। গোটা ফেব্রুয়ারি মাস এই ভাইরাস রুখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ তাঁর। ততদিনে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছে কোভিড ১৯।

মার্চ মাস অবধি ধর্মীয় ভেদাভেদ, নির্বাচনী রাজনীতি, ট্রাম্পের ভারতসফর ইত্যাদি নিয়ে মন্ত্রীরা ব্যস্ত ছিলেন। ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) করোনাকে 'মহামারী' আখ্যা করলেও ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানায় যে, এটি জরুরিকালীন অবস্থা নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লকডাউনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, পদক্ষেপটি জরুরি হলেও এর আগে যথেষ্ট পরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল। তা হয়নি বলেই কাতারে কাতারে মানুষ এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে হেঁটে যেতে বাধ্য হচ্ছেন এবং পুলিশের হাতে হেনস্থা হচ্ছেন। তাঁদের খাবার, জল বা বিশ্রামের কোনও ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্র সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেও প্রথম সারির কিছু সংবাদসংস্থা করোনার সংবাদ দেওয়ার নামে মুসলিম-বিরোধী প্রচার চালিয়েছে।

লেখিকা বলেন, ইতিহাস বলে যে, মহামারী আসলে পুরনোকে ভেঙে নতুনে প্রবেশ করতে বাধ্য করে। করোনা মহামারীও ব্যতিক্রম নয়। একটা বিশ্ব থেকে আর একটা বিশ্বে প্রবেশের দরজা এটা। তাঁর কথায়, এখন দু'টো পথ আমাদের সামনে। আমাদের সংস্কার, বিদ্বেষ, লোভ, শুকিয়ে যাওয়া নদী, ধোঁয়ায় ঢাকা আকাশ সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে পারি নতুন বিশ্বের দিকে। অথবা একটা নতুন বিশ্বের স্বপ্ন সঙ্গে নিয়ে লড়তে পারি বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *