নিজে হাতে মাস্ক বানিয়ে অভাবীদের দিচ্ছেন সেনাকর্মী, সঙ্গে খাবার

নিজে হাতে মাস্ক বানিয়ে অভাবীদের দিচ্ছেন সেনাকর্মী, সঙ্গে খাবার

পাটনা: গোটা বিশ্ব লড়ছে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত বিহারের সুধীর কুমারও নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। নিজেই তৈরি করছেন মাস্ক। তারপর তা বিলি করছেন গ্রামের মানুষের মধ্যে। এছাড়াও আলু, সোয়াবিন, সাবান বিতরণ করছেন গ্রামবাসীদের মধ্যে।

বিহারের মতিহারি জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করেন ৪৪ বছরের সুধীর কুমার। পেশার খাতিরে পাঞ্জাবের অমৃতসরে পোস্টিং তিনি। মেয়ের বিয়ের জন্য একমাসের ছুটিতে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। কিন্তু লকডাউনের জন্য তাঁর ইউনিট থেকে জানিয়েছে যে, তাঁর ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে করোনা মহামারী ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। একদিন মাস্ক কেনার জন্য ছেলেকে বাজারে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মাস্কের দাম আগুন। তিনি বলেন,  'মাস্ক কেনার জন্য আমি আমার ছেলেকে বাজারে পাঠিয়েছিলাম। ও এসে বলল, মাস্কের যেরকম চাহিদা, সেই পরিমাণ মাস্ক বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। এক-আধটা পাওয়া গেলেও তার চড়া দাম। একটা মাস্কের দামই ২০০ টাকা নিচ্ছে।'

সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এই পরিস্থিতিতে তিনি ঠিক করলেন ঘরেই মাস্ক বানাবেন তিনি। স্বামী-স্ত্রী দু'জনে মিলেই শুরু করেছেন সেই কাজ। তারপর তা বিলি করার মতো মহৎ কাজও করছেন তাঁরা। সুধীরবাবু বলেন, 'প্রথমে ভেবেছিলাম দু'-তিনদিন করব এরকম। কিন্তু যখন ইউনিট থেকে মেসেজ পেলাম যে, লকডাউনের জন্য আমার ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তখন এটাই চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।' সেনাবাহিনীর জুনিয়র কমিশনড অফিসার পদে রয়েছেন তিনি। মেয়ের বিয়ের জন্য ইতিমধ্যে ৪ লক্ষ টাকা ঋণও নিয়েছেন। তবু মানবসেবাই তাঁর কাছে মূলমন্ত্র।

মাস্ক বিলি ছাড়াও বিনামূল্যে আলু সোয়াবিন, সাবান বিতরণ করেন গ্রামবাসীদের মধ্যে। তিনি বলেন, 'আমি একটা নীতিই মেনে চলি। আমি যা আয় করছি বা ভবিষ্যতে করব, তা আমার পরিবার ও দেশের জন্য খরচ করব। অন্যকে সাহায্য করলে আমার কখনও অর্থের অভাব হবে না। উপরন্তু আশীর্বাদ পাব।' তবে এই ক্ষেত্রে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাঁকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে। সুধীর কুমার বলেন, 'ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ২৫ বছর ধরে কাজ করছি। দেশের সেবা করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় আমাদের। আমাদের জীবনের দর্শনই হল সেবা করা। মানুষের সেবা করা।'

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *