নয়াদিল্লি: সোমবার ঘোষিত হয়েছে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘পদ্মবিভূষণ’ প্রাপকদের তালিকা। এই তালিকায় রয়েছে ৭ জনের নাম, যারা ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অনস্বীকার্য অবদানের জন্য এই সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন। গতকাল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দে’র ঘোষণা অনুযায়ী প্রত্নতাত্ত্বিক বিদ্যায় বিশেষ অবদানের জন্য ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মানে সম্মানিত হচ্ছেন ভারতের বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক ব্রজবাসী লাল। রাম-জন্মভূমি অযোধ্যায় বিশেষভাবে খননকার্য চালানো ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধারের জন্য বি.বি লাল’কে এই সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক প্রফেসর ব্রজবাসী লাল রাম-জন্মভূমি অযোধ্যায় খননকার্য চালানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই রচনা করেছেন। বইটির নাম ‘রাম: হিস হিস্টোরিসিটি, মন্দির এন্ড সেতু’। এই বইয়ে তিনি দাবি করেছেন যে অতীতকালে বাবরি মসজিদের আগে সেখানে রামের মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল। এই বইয়ের একটি জায়গায় প্রফেসর লাল বলেছেন, “বাবরি মসজিদের আকৃতিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে যে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছে ১২ টি পিলার দিয়ে, যা হিন্দু মন্দিরের আকৃতি বয়ান করে। তাছাড়া বাবরি মসজিদের পিলারগুলির গায়ে দেখা যায় হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তির নিদর্শন”। এই বইয়ের পৃষ্ঠায় প্রফেসর লাল আরো বলেছেন, “এইসব জিনিস পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট হয় যে, এই পিলারগুলি কেবল বাবরি মসজিদেরই অংশ নয়, তারও আগের কোনো কিছু হিন্দু স্থাপত্যের অংশ ছিল সেগুলি”।
উল্লেখ্য, ১৯৭৬-৭৭ সালে রাম-জন্মভূমি অযোধ্যায় খননকার্য চালান প্রফেসর ব্রজবাসী লাল এবং কে.কে মহম্মদের নেতৃত্বে একটি দল। সেখানে তারা বাবরি মসজিদের নীচে একটি হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব খুঁজে পান, যেটির ধ্বংসস্তূপ বাবরি মসজিদের নিচে চাপা আছে বলে দাবি করেন তারা। শুধুমাত্র রামায়ণে উল্লিখিত রাম-জন্মভূমিই নয়, প্রফেসর লাল মহাভারতের হস্তিনাপুর ও সিন্ধু সভ্যতার খোঁজেও খননকার্য চালিয়েছিলেন। প্রফেসর ব্রজবাসী লালের প্রত্নতাত্ত্বিক ক্ষেত্রে এই বিশেষ অবদানের কথা ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান, ইতিহাস ও শিল্পকলা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া’র ডিরেক্টর জেনারেল পদে আসীন থাকাকালীন প্রফেসর লাল ২০০০ সালে দেহের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘পদ্মভূষণ’এ সম্মানিত হন।