হায়দরাবাদ: এসেছিলেন উদ্বোধন করতে৷ কিন্তু ছবি তোলার নেশায় নিজেই তড়তড়িয়ে উঠে পড়লেন অ্যাম্বুলেন্সের চালকের আসনে৷ স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখে একের পর এক পোজ দিলেন তিনি৷ উপস্থিত মানুষকে ছবি আর ভিডিয়ো তোলার আর্জিও জানিয়ে বসলেন অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তোর জেলার নাগারি বিধানসভার ওয়াইএসআর কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন অভিনেত্রী আরকে রোজা৷ তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে শুরু হয় দেদার ক্যামেরার ঝলক৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়৷
অন্ধ্রপ্রদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনফ্রাসট্রাকচার কর্পোরেশনের চেয়ারপার্সনও আরকে রোজা৷ মঙ্গলবার তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে আসা ১০৮টি নতুন অ্যাম্বুলেন্স ‘গ্রহণ’ করার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি৷ আর সেখানে এসেই ঘটিয়ে ফেললেন এই কাণ্ড৷ যার জেরে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি৷
সারা দেশে আনলক পর্ব শুরু হতেই হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে কোভিড সংক্রমণ৷ অন্ধ্রপ্রদেশের অবস্থাও সঙ্গীন৷ সন্দেহভাজন কোভিড রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত বাড়ছিল অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদা৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে ৪১২টি নতুন অ্যাম্বুলেন্স নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার৷ নাগরির জন্য বরাদ্দ অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছয় মঙ্গলবার৷ কিন্তু জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় অ্যাম্বুলেন্সগুলিকে তড়িঘড়ি কাজে নামানোর পরিবর্তে বেশ কয়েক ঘণ্টা সেগুলি আটকে রাখেন রোজা৷ তাঁর বিধানসভায় নতুন অ্যম্বুলেন্স ‘অন্তর্ভুক্ত’ হওয়ার ‘আনন্দে’ অনুষ্ঠানের তোড়জোড় শুরু করেন তিনি৷ ছোটখাটো একটি অনুষ্ঠানের পর একটি নতুন অ্যাম্বুলেন্সে উঠে পড়েন তিনি৷ অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চারিদিক চক্করও কাটেন৷ সেইসঙ্গে উপস্থিত মানুষকে ছবি ও ভিডিয়ো করতে বলেন তিনি৷ অ্যাম্বুলেন্সের ইমার্জেন্সি রেডিও-তে কথা বলতেও দেখা যায় তাঁকে৷ এই ঘটনার পরই দলের ভিতরে ও বাইরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তেলেগু ছবির এই প্রাক্তন অভিনেত্রী৷
এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি৷ গত ২১ এপ্রিল লকডাউন বিধি ভেঙে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে একটি বোরওয়েল উদ্বোধন করতে পৌঁছে যান রোজা৷ শুধু তাই নয়, তিনি যখন সুইচ টিপে বোরওয়েলটি চালু করতে যাবেন, তাঁর চলার পথে গ্রামবাসীদের পুষ্পবৃষ্টি করতে হবে বলেও গোঁ ধরেছিলেন তিনি৷ এর পরেই গ্রামের কিছু মহিলা ও শিশুকে মাস্ক পরে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে তাঁর চলার পথে ফুলের পাপড়ি ছড়ানোর নির্দেশ দেন স্থানীয় রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকরা৷