বলরাম-সুভদ্রার রথের চাকায় ফাটলে ‘অমঙ্গল’-এর ইঙ্গিত! ধ্বংসের পথে পৃথিবী?

বলরাম-সুভদ্রার রথের চাকায় ফাটলে ‘অমঙ্গল’-এর ইঙ্গিত! ধ্বংসের পথে পৃথিবী?

b3a6b845fd43c436bc56de7f4f189037

 কটক: গত শুক্রবার ছিল জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা৷ আগামী শনিবার উল্টোরথ৷ গত দু’বছর করোনা কাঁটায় পুরীর রথযাত্রা একেবারেই ছিল অনারম্বর৷ সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবার পুরীর রথযাত্রায় ফেরে সেই চেনা জৌলুস৷ হাজারো ভক্তের সমাগমে সরগরম পুরীধাম৷ কিন্তু, এত আয়োজনের মধ্যেও মিলল অমঙ্গলের ইঙ্গিত! সাড়ম্বরে সাজানো রথের চাকায় দেখা গেল ফাটল৷ বলরাম ও সুভদ্রার রথের চাকায় ফাটল দেখার পরেই আশঙ্কায় বুক কাঁপছে ভক্তদের৷ এই ঘটনায় ‘অশুভ ইঙ্গিত’ দেখছেন পুণ্যার্থীরা৷ 

আরও পড়ুন- আরও মহার্ঘ রান্নার গ্যাস! এক লাফে বাড়ল ৫০ টাকা, কলকাতায় সিলিন্ডারের দাম কত?

পুরী তীর্থক্ষেত্রে বেশ কিছু দিনধরেই একের পর এক অশুভ ঘটনা ঘটে চলেছে৷ প্রথমে পুরীর গুণ্ডিচা মন্দিরে উনুন ধ্বংস এবং তারপর রথের চাকায় ফাটল৷ কী ইঙ্গিত দিতে চাইছেন ঈশ্বর? পর পর ঘটনায় কপালে ভাঁজ ধর্মপ্রাণদের। 

পুরীর মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, রথযাত্রা উৎসবের ফি বছর ‘দক্ষিণা মোদা’ রীতি পালন করা হয়ে থাকে৷ মঙ্গলবার সেই রীতি পালনের আগে ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার রথ তিনটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন মন্দিরের সেবায়েতরা। তখনই রথের চাকায় ফাটল নজরে আসে সেবায়েতদের৷ তাঁরা দেখেন, ভগবান বলরামে রথ ‘তালধ্বজ’ এবং দেবী সুভদ্রার রথ ‘দর্পদলনা’য় হালকা চিড় ধরেছে। 

সেবায়েতরা জানান, ‘তালধ্বজা’র ‘পিডিনাহাকা’ চাকা এবং ‘দর্পদলনা’র ‘বদাউচুলা’ চাকায় ফাটল রয়েছে৷ ওই চাকা দুটিতে লোহার পাত বসিয়ে মেরামত করা হবে৷ তবে অমঙ্গলের ইঙ্গিত আগেও মিলেছে৷ এই বছর স্বয়ং ভগবান জগন্নাথদেবের রথ ‘নন্দীঘোষ’ নির্মাণের সময়েও তার চাকায় ত্রুটি ধরা পড়ে৷ সেই সময়ও প্রথমে লোহার পাত বসিয়ে মেরামতির চেষ্টা করা হয়৷ পরে অবশ্য রাতারাতি চাকাটাই পাল্টে দেওয়া হয়৷ পুরীর এই ঐতিহাসিক রথযাত্রায় একের পর এক ধাক্কা ভয় ধরাচ্ছে ভক্তদের মনে৷ 

প্রসঙ্গত, বাংলা আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে রথের উৎসব হয়ে থাকে৷ এই দিন রথে চেড়ে দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে গুণ্ডিচা মন্দিরে যান জগন্নাথ দেব৷ সেখানে সাত দিন থাকার পর ফের রথে চেপে ফেরেন নিজ স্থানে৷ জগন্নাথ দেবের এই যাত্রাকে অনেকই বলেন মাসির বাড়ি যাওয়া৷ 

পুরাণ মতে, রাজা ইন্দ্রদ্যুমের স্ত্রী ছিলেন গুণ্ডিচা৷ তাঁর নামের এই মন্দিরটি জগন্নাথ দেবের মূল মন্দির ‘শ্রীমন্দির’ থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে৷ চারদিক বাগান ঘেরা এই মন্দিরটি জগন্নাথদেবের বাগানবাড়ি নামে পরিচিত৷ অনেকের কাছে এটি ঈশ্বরের গ্রীষ্মকালীন বাগান ‘অপগম’৷ রথযাত্রার দিন তিনটি রথে চেপে তিন ভাইবোন আসেন এই গুণ্ডিচা মন্দিরেই৷

কিন্তু, রথযাত্রার পরদিনই ভাঙচুর চালানো হয় গুণ্ডিচা মন্দিরের রান্নাঘরে। প্রায় ২০টি উনুন ভেঙে ফেলা হয়। রথযাত্রার রাতেই মন্দিরের ভেতর ঢুকে এই তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা৷ এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ভক্তদের মধ্যে। রথের উৎসবের মধ্যে এমন ঘটনা ‘অমঙ্গল’-এর বার্তা বয়ে এনেছে বলেই মনে করেছেন ভক্তরা৷