নয়াদিল্লি: ফের সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেল কেন্দ্র৷ সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মাকে ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ বাতিল করল দেশের শীর্ষ আদালত৷ সিবিআইয়ের ডিরেক্টর অলোক ভার্মা ও স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করলে, দু’জনকেই ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় কেন্দ্র৷ অলোক ভার্মার ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়৷ আজ, মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের নির্দেশ বাতিল করে অলোক ভার্মাকে ডিরেক্টর পদে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়৷ তবে, পদ ফিরে পেলে তিনি কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না বলে আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
আদালত এ দিনের রায়ে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টর পদ থেকে যে ভাবে অলোক বার্মাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাতে পদ্ধতিগত ভুল ছিল। গত ২৩ অক্টোবর রাতে যে নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার তা খারিজ করে দিয়ে এ দিন সুপ্রিম কোর্ট একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, ওই কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। এক সপ্তাহের মধ্যে বৈঠকে বসার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অলোক ভার্মা। কেন্দ্রীয় সরকার, সিভিসি এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত শোনার পরে ৬ ডিসেম্বর এই মামলার রায় দান স্থগিত রাখে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এই মামলার একটি পক্ষ ছিল ‘কমন কজ’ নামে একটি এনজিও। রাকেশ আস্থানা সহ সব সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের জন্য আদালতের নজরদারিতে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের দাবি জানানো হয়। তাদের মতামতও শোনে আদালত।
এর আগে শীর্ষ আদালতে নিজের বক্তব্য জমা দেন সিবিআইয়ের ডিরেক্টর অলোক ভার্মা। সিভিসির রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। ১৯ নভেম্বরের মধ্যে সেই বক্তব্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর ডিভিশন বেঞ্চ। সেইমতো শীর্ষ আদালত অলোক ভার্মা তাঁর বক্তব্য পেশ করেন৷ এদিন শুনানিতে ভার্মার আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণাণের আবেদনের ভিত্তি তাঁকে নিজের পদে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত৷
প্রসঙ্গত, ১৬ নভেম্বর সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ভিজিলেন্স কমিশন মিশ্র রিপোর্ট দেয়। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ওই রিপোর্টে কিছু ক্ষেত্রে ভার্মাকে প্রশংসা করা হয়েছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে খারাপ মন্তব্য করা হয়েছে। মুখবন্ধ খামে ভার্মাকে এই রিপোর্টের জবাব জমা দিতে কোর্ট নির্দেশ দেয়। সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেকটর রাকেশ আস্থানা ভিজিলেন্স কমিশনের কাছে ভার্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছিলেন৷ সুপ্রিম কোর্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে দুসপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল কমিশনকে৷ পরে, উভয় পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর ২৩ অক্টোবর ভার্মাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিনোর নির্দেশ খারিজ করে আদলত৷
CBI Director Alok Verma’s plea: Supreme Court says, the government should have referred to the Select Committee consisting of the Chief Justice of India, Prime Minister and Leader of Opposition to initiate Alok Verma’s removal.
— ANI (@ANI) January 8, 2019