লখনউ: জল্পনা ছিল৷ এবার দেশের রাজনীতির ভিত নাড়িয়ে জোট গড়লেন এসপি নেতা অখিলেশ যাদব ও বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। বহুজন সমাজ পার্টি ও সমাজবাদী পার্টি যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে জোট গঠনের ঘোষণা করেন মায়া, অখলেশ৷ এদিন কংগ্রেস ও বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে বিকল্প জোটের বার্তা দেন মায়াবতী৷ আগামী লোকসভা নির্বাচনে ৩৮:৩৮ ছকে বিএসপি-এসপি লড়বেন বলেও শনিবার ঘোষণা করা হয়৷
কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগও তোলেন বিএসপি সভাপতি৷ বলেন, ‘‘কংগ্রেস দেশ শাসন করলেও কিছুই উন্নতি হয়নি৷ বেড়েছে বেকারত্ব৷ হয়েছে দুর্নীতি৷ ফলে, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানোর কোনও প্রয়োজনই নেই৷’’ এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলে মায়াবতীর দাবি, ‘‘রাফাল, নোটবন্দির মাধ্যমে দুর্নীতি করেছে৷ বছরে দু’কোটি চাকরি দিতে পারেনি মোদির বিজেপি৷ ফলে, লোকসভা ভোটে বিজেপির হার অনিবার্য৷’’ এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে রায়বরেলি ও আমেঠি কংগ্রেসকে ছাড়ার কথাও ঘোষণা করেন মায়াবতী৷
এদিন যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির জাত-পাতের রাজনীতি তুলে ধরেন অখিলেশ যাদব৷ বলেন, ‘‘জাত-পাতের নামে দেশে বিভাজনের রাজনীতি চলছে৷ হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসার আগে তাঁর জাত জানতে চাওয়া হচ্ছে৷ এটা বন্ধ হওয়া উচিত৷ আজ দেশের কৃষক, বেকার যুবক-যুবতীরা আত্মহত্যা করছেন৷ কিন্তু, বিজেপি বলছে, সবকা বিকাশ৷’’ এদিন সাংবাদিক বৈঠক শেষে অখিলেশ বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ থেকেই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন৷ এটাই এখানকার রাজনীতি৷ এবারও তাই হবে৷’’ তবে, প্রধানমন্ত্রী পদে কে লড়বেন? মায়াবতী, না অখিলেশ নিজেই? উত্তর এড়িয়েছেন অখিলেশ৷ তবে, আমেঠির আসন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে ছেড়ে দেওয়ার মধ্যেই দিয়েই কী এই প্রশ্নের জবাব দিলেন অখিলেশ? প্রশ্ন ঘুরছে পর্যবেক্ষক মহলের৷
এসপি ও বিএসপির মধ্যে আসন রফা প্রায় পাকা। শুক্রবার দিল্লিতে বিএসপি নেত্রী মায়াবতী ও এসপি নেতা অখিলেশের মধ্যে কথা হয়৷ কংগ্রেসের সঙ্গে উত্তর প্রদেশে জোট করার কোনও তাগিদই অনুভব করল না বহুজন সমাজ পার্টি ও সমাজবাদী পার্টি৷ এসপি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তাদের কংগ্রেসকে দরকার নেই। বুয়া-বাবুয়া নিজেরাই একশ। উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে হারাতে তাদের কংগ্রেসকে পাশে নেওয়ার দরকারই পড়বে না। একইসঙ্গে এসপি কংগ্রেসকে উত্তর প্রদেশে অপ্রাসঙ্গিক শক্তি বলেও কটাক্ষ করে৷
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে রায়বরেলি ও আমেঠি কংগ্রেসকে ছাড়ার কথাও ঘোষণা করেন মায়াবতী৷ রায়বরেলি ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী ও আমেঠি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর কেন্দ্র৷ এই ২ কেন্দ্রে বহু বছর থেকে কংগ্রেসই প্রতিনিধিত্ব করছে। এছাড়া বাকি কোথাও কংগ্রেসকে জমি ছাড়তে নারাজ বুয়া কিংবা বাবুয়া৷
দিল্লিতে বিরোধীদের বৈঠকে মমতা গিয়েছিলেন৷ পরে কেসিআর তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। এদিকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক জানিয়ে দিয়েছেন তিনি কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব রেখে চলবেন। এই অবস্থায় ১৯-এ কতগুলি জোট হবে? তার চেহারা কেমন হবে? কে শেষপর্যন্ত কোন দিকে থাকবেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে৷ সবাই মমতাকে পাশে চাইছেন। দেখা যাক দিদি এখন কী করেন৷
Mayawati: BSP will contest on 38 seats, SP on 38 seats. Two Lok Sabha seats we have left for other parties and Amethi and Rae Bareli have been left for Congress. pic.twitter.com/lsdCdxKNah
— ANI (@ANI) January 12, 2019