বাংলাদেশের পর রাশিয়া! হাত তুলে নিল ভারত?

দিল্লি: হাত তুলে নিল ভারত।বাংলাদেশের পর রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করল নয়াদিল্লি?আসল স্ট্র্যাটেজি ধরা কঠিন। রাশিয়া নাকি ইউক্রেন? কার শিরে সংক্রান্তি? টানা আড়াই বছর ধরে…

দিল্লি: হাত তুলে নিল ভারত।বাংলাদেশের পর রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করল নয়াদিল্লি?আসল স্ট্র্যাটেজি ধরা কঠিন।

রাশিয়া নাকি ইউক্রেন? কার শিরে সংক্রান্তি? টানা আড়াই বছর ধরে চলা বিশ্বের অন্যতম বড় যুদ্ধে বিরাট ডিশিসন ভারতের। আর কখনোই সিদ্ধান্ত নিল ভারত? যখন রাশিয়ায় ঢুকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। তাহলে কী বন্ধু রাশিয়া থেকে মুখ ফেরালো নয়াদিল্লি? না, রাশিয়াও বসে নেই। পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ বেলারুশ পাশে আছে। কিয়েভের ওই পদক্ষেপের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সীমান্ত অঞ্চলে প্রচুর সেনা মোতায়েন করেছে বেলারুশ। আর এতেই নতুন করে যুদ্ধের শঙ্কা বাড়ছে। কিন্তু এখানে ইম্পোর্টেন্ট পয়েন্টটা হল ভারত কখনোই যুদ্ধ চায়নি। মোদী বারংবার বলেছেন, ‘‘এটা যুদ্ধের সময় নয়।’’

তাহলে, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে যখন দুটো দেশই আবার নতুন করে ছক সাজাচ্ছে তখন ভারত নতুন করে কেন ইনিসিয়েটিভ নিয়ে যুদ্ধ থামাতে চাইছে না? কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ এই প্রশ্নটাকেই সামনে রাখছেন। তাহলে ঠিক কি চাইছে ভারত?

সেক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি অলরেডি, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনে আগ্রহী নয় ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইউক্রেন সফরের ঠিক আগে বিদেশ মন্ত্রকের একটা সূত্রের তরফে এই কথা জানানো হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল তাহলে ইউক্রেনে যাওয়ার পর মোদী ঠিক কোন বিষয় নিয়ে জেলেনস্কির মুখোমুখি বসে আলোচনা করবেন? হ্যাঁ, একদম ঠিক শুনছেন। আগামী ২৩ অগস্ট ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন মোদী। সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে এই প্রথম ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন মোদী। এর আগে বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছিল, সংঘাতে ইতি টানতে ভারতের তরফে প্রয়োজনীয় সমস্ত চেষ্টা করা হবে বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছিলেন মোদী। তাহলে হঠাৎ করে কি অবস্থান বদল ভারতের? না বিষয়টা একদমই তেমন নয়। খোলসা করে বলি।

জ়েলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ অ্যান্ড্রি ইয়রমাক সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘মোদী শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র উদ্ধৃত করে প্রকাশিত খবরে দাবি, মধ্যস্থতায় কোনও রকম ভূমিকা নেবেন না মোদী। আর ঠিক এখানেই নিজেদের স্ট্যান্ড পয়েন্ট পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিয়েছে ভারত। মনে করিয়ে দিই, গত জুন মাসে জি৭ সম্মেলনে যোগ দিতে ইটালি গিয়ে জ়েলেনস্কির সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক করেছিলেন মোদী। তার আগে জাপানেও দু’জনের একান্তে আলোচনা হয়েছিল। তাহলে কি কোথাও দাঁড়িয়ে রাশিয়ার হাত ছেড়ে ইউক্রেন কে সাপোর্ট করছে ভারত? যখন বিশেষজ্ঞদের একাংশ এই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন, তখন শান্তি প্রক্রিয়ায় মস্কো এবং কিভের মধ্যে বার্তা সমন্বয়ের কাজ নয়াদিল্লি করতে পারে বলে স্পষ্ট জানিয়েছে কেন্দ্র।

এখানে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে বলতে গেলে দুটো বছর পিছিয়ে যেতে হবে। যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০২২ সালে, সেই সময় আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল এরকম কিছু কথা। যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম থেকেই একটা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে আসছে ভারত। সময় যত গড়িয়েছে, ততই গোটা বিশ্ব এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে যে রাশিয়ার সঙ্গে যতই ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক না কেন যুদ্ধের মাঝে কোথাও ভারত নেই ভারত যুদ্ধ চায়না এবং ভারত এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ। একইসঙ্গে সময় যত এগোবে ততই যে ভারতের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ এই অবস্থান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে তেমনটাও মনে করেছিলেন বিশ্লেষকরা। তবে সময়ের পরিক্রমায় রাশিয়া ও পশ্চিমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে যুদ্ধ বন্ধে নয়াদিল্লি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও মত ছিল তাঁদের। অবশেষে সেই ধ্যান-ধারণাকেই নস্যাৎ করল ভারত।

তবে এতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা কতটা কমলো? ইতিমধ্যেই সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ গোটা বিশ্ব রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবেই দেখতে চেয়েছিল। সেই ভারত সরাসরি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করায় রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মেয়াদ আরো কত দিন বাড়বে সেটা বলবে সময়।।