ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত নয়, অগ্নিপথ বিতর্কের মাঝেই ‘সান্তনা’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের

ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত নয়, অগ্নিপথ বিতর্কের মাঝেই ‘সান্তনা’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের

নয়াদিল্লি: ‘অগ্নিবীর’দের পথ অনিশ্চিত। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরির নিয়োগের নতুন প্রকল্প ‘অগ্নিপথ’-ের কথা ঘোষণা হতেই তাই দেশজুড়ে জ্বলে উঠেছে বিক্ষোভের আগুন। এর মধ্যে সবথেকে ভয়াবহ অবস্থা বিহারের। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি আসলে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর একটি উপায় মাত্র, এমনটাই দাবি করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন বিহারের যুবসমাজ। এই বিক্ষোভ আন্দোলনের জেরে টায়ার জ্বালানো, পাথর ছোঁড়া, গাড়ি-ট্রেন ভাঙচুরের মতো একাধিক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে সমগ্র রাজ্যজুড়ে। এমতাবস্থায় দেশের যুবসমাজকে বাগে আনতে কিছুটা ফাঁকা সান্ত্বনা দিলেন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্তারা। তাদের বক্তব্য, সশস্ত্র বাহিনীতে যাদের নিযুক্ত করা হবে তাদের ভবিষ্যৎ মোটেই অনিশ্চিত নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সমস্ত আধিকারিকদের দাবি, সামরিক বাহিনীতে চার বছরের কাজের সুযোগ থাকলেও ভবিষ্যতে অগ্নিবীরদের সামনে কর্মসংস্থানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। তাদের কাজের কোন সমস্যাই হবে না।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তাদের দাবি, সামরিক বাহিনীতে চার বছরের এই নিয়োগ পদ্ধতি যথেষ্ট যুক্তিপূর্ণ। সশস্ত্র বাহিনীতে চার বছর কাজ করার পরেও এই সমস্ত যুবকদের কর্মসংস্থানের প্রচুর সুযোগ থাকবে এবং ভবিষ্যতে তারা অন্যান্য অনেক ভালো চাকরিতে যোগদান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে যাতে তারা নিজেদের ব্যবসা কিংবা সংস্থা খুলতে পারেন তার জন্যও সরকারের তরফ থেকে এককালীন টাকা দেওয়া হবে। তাদের আরও দাবি, আনুষ্ঠানিকভাবে অগ্নিপথ মডেল চালু করার আগে প্রায় দু’বছর ধরে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্তাদের সঙ্গে এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা চালানো হয়েছে ও তাদের পরামর্শ মেনে তবেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকেই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সশস্ত্র বাহিনীর নিয়োগের এই নতুন মডেল অগ্নিপথের কথা ঘোষণা করেন। জানানো হয় এই মডেলের আওতায় চার বছরের জন্য দেশের তিন সামরিক বাহিনীতে যুবক যুবতীদের নিয়োগ করা হবে। চার বছরে চাকরি শেষে ৫৫ শতাংশ অগ্নিবীরদের কাজের থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও ৪৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ পাবেন। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয় ৪ বছর বাদে যাদের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হবে তাদের এককালীন মোটা টাকা দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। তবে অগ্নিপথের কথা ঘোষণা পর থেকেই এই মডেলকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ইতিমধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে একাধিক বিতর্ক এবং সমালোচনা। সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তাদের একাংশই মনে করছেন অগ্নিপথ মডেল ত্রুটিপূর্ণ এবং পরবর্তীতে এই মডেল নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। এক্ষেত্রে কিভাবে ৪৫ শতাংশকে সশস্ত্র বাহিনীর কাজের সঙ্গে যুক্ত রাখা হবে আর কেনইবা ৫৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে সে বিষয়ে কোনো নিয়ম-নীতি এখনো পর্যন্ত কারোর জানা নেই। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *