গুয়াহাটি: করোনা আতঙ্কের মধ্যেই ভারতে নতুন আতঙ্কের নাম আফ্রিকান সোয়াইন জ্বর (এএসএফ)। দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলেছে এই রোগ। ভোপালের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাই সিকিউরিটি অ্যানিম্যাল ডিজিজেস নমুনা পরীক্ষা করে জানিয়েছে এই মহামারীর উপস্থিতির কথা। ইতিমধ্যে অসমের ৩০০টিরও বেশি গ্রামে ২,৫০০ শুয়োরের মৃত্যু হএয়ছে আফ্রিকান সোয়াইন জ্বরে। যদিও স্থানীয় শুয়োর খামার মালিকরা জানিয়েছে, গত দু'সপ্তাহে ৩০ হাজারেরও বেশি শুয়োরের মৃত্যু হয়েছে ওই রোগে। সতর্কবার্তা জারি হয়েছে এই রাজ্যেও।
আফ্রিকান সোয়াইন জ্বরে দেশের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে অসম। সূত্রের খবর, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই রাজ্যে এর প্রকোপ লক্ষ্য করা যায়। ক্লাসিক্যাল সোয়াইন জ্বরের সঙ্গে এর বেশ কিছু মিল রয়েছে বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অসম ছাড়াও অরুণাচল প্রদেশে এই রোগের ফলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সরকারি হিসেব অনুসারে, শুধু অসমেই এখনও পর্যন্ত আফ্রিকান সোয়াইন জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা ২,৫০০ ছাড়িয়েছে।
রাজ্যের পশুপালন মন্ত্রী অতুল বোরা জানিয়েছেন, শুয়োরের খামারের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ রয়েছেই এই রাজ্যে। ২০ লক্ষেরও বেশি শুয়োর রয়েছে তাঁদের খামারে। সেদিক থেকে পরিস্থিতি খুবই জটিল। তবে আকস্মিক এই সমস্যা মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপ করছেন সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল। বিশেষ বৈঠকেরও আয়োজন করেছেন তিনি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় শুয়োরের মাংস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের তরফে যোগরাজ গুরুং জানিয়েছেন, ‘আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলাকে এই বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসকদের কাছে প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট জমা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। চেকপোস্টেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।' তবে মানুষের ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শুয়োর চাষের ক্ষেত্রে খামার মালিক ও কর্মীরা ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আফ্রিকায় প্রথম ধরা পড়েছিল বলে এর নাম আফ্রিকান সোয়াইন জ্বর। তবে করোনা সংক্রমণের আগে গত বছরে আফ্রিকান সোয়াইন জ্বরে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছিল চীন।