লখনউ: প্রায় তিন দশক পর বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলি মনোহর জোশী, উমা ভারতীর সহ ৩২ জন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করল লখনউয়ে সিবিআই-এর বিশেষ আদালত৷ উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে রায় দেওয়া হয়৷ এদিন বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃঢ় কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক ছিল না বলেও জানান বিচারক৷ যদিও এই রায়ে একেবারেই নাখুশ দেশের মুসলিম সম্প্রদায়৷ তারা উচ্চতর আদালতে যাবেন বলেও জানিয়েছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড৷ এই ঘটনা আচমকা ঘটে গিয়েছে সে কথা তারা মানতে নারাজ৷ সিবিআইএর কাছে নেগেটিভ না থাকলেও, ঘটনার যে ছবি প্রকাশিত হয়েছিল তা মিথ্যে নয় বলেই তাঁদের দাবি৷
আরও পড়ুন- BREAKING: বাবরি মামলার রায় ঘোষণা, অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস দিল আদালত
এদিনর রায় বেরনোর পর লালকৃষ্ণ আডাবাণীকে শুভেচ্ছা জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ তাঁকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানান জেপি নাড্ডাও৷ অন্যদিকে, আডবানী বলেন, এই রায়কে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই৷ এই রায় রামজন্মভূমি আন্দোলনের প্রতি আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং বিজেপি’র বিশ্বাস প্রমাণ করেছে৷ আবার মুরলি মনোহর জোশী বলেন, আদালত এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এই রায় প্রমাণ করে যে ৬ ডিসেম্বর কোনও ষড়যন্ত্র করা হয়নি৷ আমরা খুশি৷ সকলে নিশ্চই রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে আনন্দিত৷’’
এদিন আদালতে আডবাণী-জোশীদের পক্ষে আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে৷ বলা হয়েছে, বাবরি মসজিদের গম্বুজের নীচে রামলালার মূর্তি রাখা ছিল৷ এই ঘটনা যদি পূর্বপরিকল্পিতই হয়ে থাকে তাহলে অভিযুক্ত নেতারা কেন রাম মূর্তি ধ্বংস করতে যাবেন৷ সেখানে তাঁরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ডেকেছিলেন৷ এই ঘটনা পবর্বপরিকল্পিত হলে সেখান থেকে রামলালার মূর্তি আগেই সরিয়ে নেওয়া হত৷
আরও পড়ুন- বাবরি মামলার রায়ে কী বললেন ‘বেকসুর’ আডবানী, মুরলী মনোহর জোশী?
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর হাজার হাজার উন্মত্ত করসেবকরা গুঁড়িয়ে দিয়েছিল অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ৷ মসজিদ ধ্বংসের চক্রান্তকারী বা প্রত্যক্ষ মদতদাতা হিসেবে নাম জড়িয়েছিল বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারের লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, গোবিন্দাচার্য, উমা ভারতী, অশোক সিঙ্ঘল, কল্যাণ সিংহ, সাধ্বী ঋতম্ভরা, বিনয় কাটিয়ার মতে প্রথম সারির নেতার৷ কী ভাবে লাখ লাখ করসেবকদের অযোধ্যায় ডাকা হয়েছিল৷ কী ভাবে সমাবেশে দাঁড়িয়ে তাঁদের ‘উদ্বুদ্ধ’ করা হয়েছিল তা সকলের সামনেই পরিষ্কার ছিল৷ তবুও এই মামলার রায় বেরতে ২৮ বছর সময় লেগে গেল৷