নয়াদিল্লি: গর্ভপাতের আইনি অধিকার নিয়ে শুক্রবার থেকে ফের শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। কারণ সম্প্রতি মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমেরিকার প্রায় ৫০ বছরের পুরনো গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করা হয়েছে। সেই দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে আমেরিকার গর্ভপাতের ব্যাপারে ১৯৭৩ সালের দেশের সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছিল তা অবিলম্বে খারিজ করা হচ্ছে। এরপরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, এই গর্ভপাত আইন নিয়ে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। এমতাবস্তায় প্রশ্ন উঠছে ভারতের গর্ভপাতের আইন ঠিক কি? দেশে গর্ভপাত কি আইন সিদ্ধ? নাকি এদেশেও নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি মেনে গর্ভপাত করাতে হয়? আসুন জেনে নেওয়া যাক আমাদের দেশের গর্ভপাত আইনের খুঁটিনাটি।
* ভারতের আইন অনুসারে গর্ভধারণের কুড়ি সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করাতে হলে একজন চিকিৎসকের মতামত প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে ঠিক কি কারণে ওই মহিলা গর্ভপাত করাচ্ছেন তা জানা আবশ্যক। তবে সম্প্রতি ভারতের গর্ভপাত সংক্রান্ত আইনে মোদী জমানায় কিছু সংশোধন আনা হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী, গর্ভপাতের সর্বোচ্চ সময় কুড়ি সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে একজনের পরিবর্তে দুজন চিকিৎসকের মতামত নিতে হবে এবং বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রেই কোন নারী ২০ সপ্তাহের পরিবর্তে ২৪ সপ্তাহে গর্ভপাত করানোর অনুমতি পাবেন।
* যদি কেউ যৌন লাঞ্ছনার শিকার হন এবং সেক্ষেত্রে যদি তার নিকটাত্মীয়রাই অপরাধে শামিল থাকেন তাহলে গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহ পরেও তাঁর গর্ভপাত করার অধিকার থাকবে। অন্যদিকে ভিন্নভাবে সক্ষম অথবা নাবালিকা কিংবা অরক্ষণীয়া মহিলাদের গর্ভপাতের ক্ষেত্রেও এই একই নিয়ম কার্যকর হবে।
* তবে কোনও ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যদি দেখেন যে গর্ভধারণের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম হয়ে যাওয়ার পরে ভ্রূণে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে তাহলে তা সর্বোচ্চ সীমার গর্ভপাতের ক্ষেত্রে বিবেচ্য হবে না। সেক্ষেত্রে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হবে এবং সেই বোর্ডই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
* তবে বিশেষ বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ২৪ সপ্তাহের পরেও গর্ভপাতের অনুমতি মেলে। এক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের একটি সাম্প্রতিক রায় মাইলফলক হয়ে রয়েছে। কারণ সে ক্ষেত্রে গর্ভধারণের পর ৩৫ সপ্তাহের মাথায় গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছিল উচ্চ আদালত।
* এছাড়া যে মহিলার গর্ভপাত করানো হচ্ছে তার নাম কিংবা পরিচয় প্রকাশ্যে আনাও আইনত অপরাধ বলে গণ্য হয় আমাদের দেশে। সে ক্ষেত্রে মহিলার পরিচয় যাতে কোনোভাবেই সামনে না আসে সেদিকে কড়া নজর থাকে আদালতের।