নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, করোনা টিকা, সরকারি গাইডলাইন সমস্ত কিছু এক ছাদের তলায় আনতে ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের তৎপরতায় তৈরি হয়েছিল একটি অ্যাপ, যার নাম আরোগ্য সেতু। বলা বাহুল্য ২০২০ এবং ২০২১ সালে অর্থাৎ যে সময় করোনার ভয়াবহতা ছিল কার্যত চোখে পড়ার মতো সেই সময় এই অ্যাপের মাধ্যমে করোনা সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে দেশের মানুষ। একইভাবে এই অ্যাপের রেজিস্ট্রেশন এর উপর ভিত্তি করেই দেশবাসীকে দেওয়া হয়েছে করোনার টিকা। এক সময় প্রত্যেক নাগরিকের ফোনে এই অ্যাপ থাকা ছিল বাধ্যতামূলক। কিন্তু বর্তমানে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব থাকলেও তার ভয়াবহতা অনেকটাই ফিকে হয়েছে। আর তাই এমন আবহে অচল হয়ে গেল আরোগ্য সেতু অ্যাপ। জানা যাচ্ছে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার আরোগ্য সেতুর ‘ডেটা অ্যাক্সেস ও শেয়ারিং প্রটোকল’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে। যার অর্থ এই অ্যাপের মাধ্যমে আর কোনরকম তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে না।
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি এই অ্যাপ নিয়ে একটি আরটিআই ফাইল হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই কেন্দ্র জানিয়েছে যে, ২০২২ সালের ১০ মে থেকে আরোগ্য সেতুর ‘ডেটা এক্সেস ও শেয়ারিং প্রটোকল’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই অ্যাপের নির্মাতারা জানিয়েছেন শেয়ারিং প্রটোকল বন্ধ করে দেওয়ার কারণ হল এই অ্যাপ এখন প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে।
উল্লেখ্য করোনা কালে কেন্দ্রীয় সরকারের এই আরোগ্য সেতু এক এক প্রকার বাধ্যতামূলক ছিল দেশের সর্বক্ষেত্রে। করোণা সংক্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য মিলত এই অ্যাপে। পাশাপাশি আমাদের আশেপাশে করোনায় আক্রান্ত কোন ব্যক্তি রয়েছেন কিনা তাও এই অ্যাপের মাধ্যমেই জানা যেত। সেক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত হলেই সেই ব্যক্তিকে যাবতীয় তথ্য ওই অ্যাপে নথিভূক্ত করতে হত। এটাই ছিল নিয়ম। কিন্তু এই অ্যাপের ডাটা এক্সেস শেয়ারিং প্রটোকল বন্ধ করে দেওয়ায় অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ডেটার ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত তথ্য তথা তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এর উত্তরে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টারের মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, আরোগ্য সেতু ‘কনটাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ’ ছিল। অর্থাৎ, আপনার ধারে কাছে কোনও সংক্রমিত ব্যক্তি রয়েছেন কি না, তা এই অ্যাপের মাধ্যমে জানা যেত। কিন্তু এখন আর তার কোনও প্রাসঙ্গিকতা না থাকায় আগামী দিনে এটি জাতীয় স্বাস্থ্য অ্যাপে পরিণত করা হবে।