নয়াদিল্লি: কৃষি আইনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দিল্লির তিন সীমান্ত- সিংঘু, গাজীপুর এবং টিকরি থেকে হাজারো কৃষকের ট্রাক্টর র্যালিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানী দিল্লির এলাকা এলাকা। আর আজকের এই আন্দোলনে হিংসা ছড়ানোর তীব্র বিরোধিতা করে দিল্লির শাসক দল আম আদমি পার্টি। এই আন্দোলনকে তারা ‘অনুশোচীয়’ বলে দুঃখপ্রকাশ করে।
৩ টি কৃষি আইনের নতুন সংযোজনের বিরোধিতা করা কৃষকদের পাশে এতদিন আম আদমি পার্টি ভীষণভাবে থাকলেও আজকের এই হিংসার পর তাদের গলাতেও উঠে এল উৎকণ্ঠার সুর। মঙ্গলবার কৃষকদের ট্রাক্টর র্যালিকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া হিংসা পরিস্থিতির বিরোধিতা করে আম আদমি পার্টি বলেছে, “যে আন্দোলন এতদিন শান্তির সঙ্গে হয়ে আসছিল, আজ হঠাৎ করে তার রূপ পরিবর্তন হওয়ার ঘটনা যথিত ন্যক্কারজনক। আম আদমি পার্টি তীব্রভাবে এই হিংসার বিরোধিতা করছে”। এছাড়াও আপের বক্তব্য, “কৃষক আন্দোলনের নেতাদের দাবি অনুসারে আজকের হিংসাকে কোনোভাবেই তারা মদত দেয়নি। কিন্তু আর যাই হোক, আজকের এই হিংসাত্মক ঘটনা আন্দোলনের গতিবিধিকে আরো বেশি দুর্বল করে তুলবে”। তাছাড়াও আপের দাবি, শাসক দল বিজেপি মঙ্গলবারের এই হিংসায় মদত দিয়েছে কৃষকদের। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার দিল্লি পুলিশের গোপন সূত্রে জানা গেছিল যে মঙ্গলবারের কৃষক আন্দোলনে হিংসার বীজ বপন করতে পারে পাকিস্তানি সংস্থা আইএসআই, যারা খালিস্তানীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে নিয়মিত। সূত্র মারফৎ মঙ্গলবারের এই আন্দোলনে পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের আভাষ মিলেছিল একদিন আগেই।
মঙ্গলবার গোটা দেশ যখন দেশের ৭২ তম সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপনে মেতে উঠেছিল, দিল্লির রাজপথে চলছিল বর্ণাঢ্য সেনা কুচকাওয়াজ, ঠিক তখনই রাজধানীর সীমান্তে ট্রাক্টর নিয়ে রাজধানীতে প্রবেশের চেষ্টা শুরু হয়েছিল কৃষকদের। কিছু আন্দোলনকারী দিল্লি পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় এবং এই হিংসার পরিস্থিতিতে একজনের প্রাণও ঝরে পড়ে ঘটনাস্থলেই। এই আন্দোলনে হিংসার ঘটনাকে ‘সম্পুর্ন বহিরাগত হস্তক্ষেপ’ বলে দাবি করেছে কৃষক নেতারা। এদিকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংও এই ঘটনার বিরোধিতা করেছেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে সামাল দিতে পুলিশ কর্তাদের নিয়ে একটি উচ্চপদস্থ বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সবে মিলে উত্তপ্ত রাজধানীর সুরক্ষা এখন এক বৃহৎ প্রশনচিহ্নের মুখে দাঁড়িয়ে, যার চর্চা ঘুরে বেড়াচ্ছে এখন সারা দেশে।