গুয়াহাটি: ভারতে এসে পৌঁছেছে যুদ্ধবিমান রাফাল জেট। বুধবারই রাফাল বিমানের প্রথম ব্যাচের পাঁচটি বিমান ভারতে এসে পৌঁছয়। এদিন বিকেলে হরিয়ানার আম্বালা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণ করে সেগুলি। এরই মধ্যে রাফাল বিমানের বায়ুসেনার পাইলটদের জন্য জি স্যুটের জন্য প্রতীক তৈরি করে ফেলেছেন বছর বাইশের তরুণ। নাম সৌরভ ছরদিয়া। অসমের এই যুবক পেশায় থ্রিডি ডিজাইনার। তাঁর তৈরি দুটি ডিজাইনই ভারতের বায়ুসেনার আধিকারিকদের পছন্দ হয়েছে।
অসমের চিরাং জেলার বাসুগাঁও এলাকার ভূমিপুত্র সৌরভ। বায়ুসেনার বিভিন্ন কাজ তিনি এর আগেও করেছেন। রাফালের প্রথম যুদ্ধবিমানটি বুধবার ভারতে উড়িয়ে এনেছেন ১৭ গোল্ডেন অ্যারোস' স্কোয়াড্রনের কম্যান্ডিং অফিসার। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন একজন ফরাসি পাইলটও। ফরাসি বিমানঘাঁটিতে প্রথম ব্যাচের ভারতের সাতজন পাইলটের রাফালে ওড়ানোর প্রশিক্ষণ পর্ব চলেছে। ওই গোল্ডেন অ্যারো স্কোয়াড্রনের জন্যই সৌরভ দুটি প্রতীক তৈরি করেন। সেই প্রতীক আঁকা উর্দি পরেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কম্যান্ডিং অফিসাররা দেশের মাটি ছুঁলেন এদিন।
রাফালের আগে বায়ুসেনার জন্য কী করেছিলেন সৌরভ? জানা গিয়েছে এর আগে সূ্র্য কিরণ এরোব্যাটিক দল ও তেজস স্কোয়াড্রনের জন্য আলাদা আলাদা প্রতীক তৈরি করেন তিনি। সেখনে তাঁর সাফল্যই রাস্তা পরিষ্কার করে দেয়। রাফালের মতো গুরত্বপূর্ণ স্কোয়াড্রনের জন্যও প্রতীক তৈরি দায়িত্ব বর্তায়। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৌরভ জানিয়েছে, টানা একসপ্তাহ ধরে কাজ করেছেন তিনি। শেষমেশ ফল মেলে। প্রতীক তৈরি হয় ও তা পছন্দও হয় উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে গর্বিত সৌরভ। তিনি জানান প্রথম ব্যাচে ভারতের সাত পাইলটের জন্য ডিজাইন তৈরি করা তাঁর কাছে স্পেশ্যাল। রাফাল জেটের কথা মাথায় রেখে কাজ শুরু করেন তিনি। হিমালয়ান ঈগল, স্কোয়াড্রনের লক্ষ্য ও জাতীয় পতাকার রং মিলিয়ে তিনি একটি প্রতীকের ডিজাইন বানান। অন্যটিতে স্থান পেয়েছে যুদ্ধবিমান ও স্কোয়াড্রনের লোগো তির-ধনুকের চিহ্ণ।
বায়ুসেনার প্রতি ঝোঁক সৌরভের ছোটবেলা থেকেই ছিল। কিন্তু স্বাস্থ্যের কারণে যুদ্ধবিমানের পাইলট তাঁর হওয়া হয়নি। কিন্তু হাল ছাড়েননি সৌরভ। অ্যাভিয়েশন আর্ট, অ্যাভিয়েশন ফটোগ্রাফি, প্যাচ ডিজাইনিংয়ের মতো বিভিন্ন কাজ করেছেন আর চেষ্টা করেছেন দেশের সেবা করতে। দিল্লিতে একটি থ্রিডি গেমিং সংস্থায় কাজ করেন তিনি। কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময়ই সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ শুরু। তাঁর বিমানের নকসা দেখে আইএএফের এক ইউনিটের পছন্দ হয়। সেই সময় তাঁকে প্যাচ ডিজাইনের অফার দেওয়া হয়। বাহিনীর কর্তাদের জহুরির চোখ যে ভুল নয়, তা আজ প্রমাণ করে দিয়েছেন সৌরভ।