আজ বিকেল: ধর্মের বেড়াজাল সমাজ তৈরি করে দেয় মানুষ না। মানবিকতা তো সমস্ত রকম ধর্মের অনেক ঊর্ধ্বে থাকে। তাই দেশ চালানোর কারিগররা ধর্মের নামে খেয়োখেয়ির রাজনীতি করে হিংসার জোগান দিচ্ছেন, সেই তখনই ভালবাসার বার্তা দিলেন দুই বৃদ্ধ। ইরফান মহম্মদ খান ও ফরিদ খান। দুজনের উদ্যোগেই সহকর্মী মোরারি লাল শ্রীবাস্তবের পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হল। নিজেরাই দাঁড়িয়ে থেকে সবকিছু করলেন। নিয়ম মেনে চুকল শ্রাদ্ধশান্তি, ব্রাহ্মণ ভোজনও বাদ গেল না। বর্তমান পরিস্থিতিতে ধর্মকে উহ্য রেখেই মানবিকতার নজির গড়লেন উত্তরপ্রদেশের এই দুই পোল্ট্রি কর্মী।
জানা গিয়েছে, ৬৫ বছরের মোরারি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ওই পোল্ট্রি ফার্মে কাজ করছিলেন। গত ১৩ জুন কাজ করতে করতেই তাঁর মৃত্যু হয়। অচেতন অবস্থায় ফার্মের অন্যান্য কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার কের হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন মোরারি লালকে। বৃদ্ধ মোরারি তিন কুলে কেউ ছিল না। কে মানবে নিয়মকানুন, কেই বা করবে শ্রাদ্ধ শান্তি। ভেবেচিন্তের সহকর্মীরা অন্ত্যেষ্টির ভার নেন ইরফান ও ফরিদ। সনাতনী প্রথা মেনেই তাঁরা দশ দিনের মাথায় ২২জুন ‘দশন’ও করেছেন, ‘তেরভি’ পালন করেছেন ২৫জুন।
এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য তাঁরা কার্ড ছাপিয়েই লোক নিমন্ত্রণও করেছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছেন পুরো খান পরিবার এবং সেই ফার্মের বাকিরা। ব্রাহ্মণ ভোজন থেকে শান্তিপাঠ, সবই করা হয়েছে যথাবিহিত নিয়ম মেনে। পোল্ট্রি ফার্মের সমস্ত কর্মী থেকে শুরু করে পাড়া প্রতিবেশী মোরারিকে চিনতেন এমন লোকজন সবাইকেই তাঁর পারলৌকিক ক্রিয়ায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই আমন্ত্রিতদের তালিকায় হিন্দু মুসলিম দুই ধরনের মানুষই ছিল। সবমিলিয়ে হাজার খানেক আমন্ত্রিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ব্রাহ্মণ ভোজনও করানো হয়।
বাড়ির আর পাঁচটি সদস্যদের একজন ছিলেন মোরারি জি তাই তাঁর মৃত্যু পরবর্তী পারলৌকিক ক্রিয়া নিজেরাই করেছি। সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন ইরফান ও ফরিদ খান। অভিনব ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের ভাদোহি জেলার হরিরাম গ্রামের।