‘মা’ই পারে সন্তানকে আদেশ দিতে’, কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর মাকে চিঠি

নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল গত বছরের শেষ দিকে। পাঞ্জাব হরিয়ানা সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে অসংখ্য কৃষক নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন রাজধানীতে।শুরু হয়েছিল অবস্থান বিক্ষোভ। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হলেও কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্রের দ্বন্দ্বের সুরাহা হয় নি। একের পর এক বৈঠকের পরও মেলে নি সমাধান সূত্র। কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে এবার শেষ সম্বল হিসেবে তাই এক কৃষক বেছে নিলেন অভিনব পন্থা।

কেন্দ্র সরকারের কাছে দীর্ঘ দিন ধরে আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন কৃষকরা। কিন্তু তাঁদের দাবি পুরোপুরি মেনে নেওয়া হচ্ছে না কিছুতেই। এমতাবস্থায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর মায়ের কাছেই ‘নালিশ’ করে বসলেন পাঞ্জাবের এক কৃষক। একটি চিঠি লিখে তিনি ১০০ বছর ছুঁইছুঁই হিরাবেন মোদীর কাছে নিজের আবেদন জানান। নরেন্দ্র মোদী যাতে কৃষকদের দাবি মেনে নিয়ে কৃষি আইন বাতিল করে দেন, সেই আর্জিই জানিয়েছেন ওই কৃষক। চিঠিতে হিরাবেন মোদীকে মা হিসেবে ছেলের উপর প্রভাব খাটানোর অনুরোধ করেছেন তিনি।

জানা গেছে, আন্দোলনরত ওই জনৈক কৃষকের নাম হরপ্রীত সিং। তিনি পাঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার গোলু কা মধ গ্রামের বাসিন্দা। বিশুদ্ধ হিন্দি ভাষায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর মায়ের উদ্দেশ্যে তাঁর আর্জি জানিয়ে চিঠি লিখেছেন। আন্দোলনরত কৃষকদের করুণ অবস্থার কথা বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, “যারা গোটা দেশকে খাওয়ান, তাঁরা এখন দিল্লির রাস্তায়। প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যেই তাঁরা তিনটি আইন বাতিলের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্দোলনকারীদের মধ্যে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, সকলেই আছেন। ঠান্ডায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, অনেকে মারাও গেছেন।”

এরপরই আইন বাতিলের জন্য ছেলেকে রাজি করানোর আবেদন জানানো হয় হিরাবেন মোদীকে। হরপ্রীত সিং চিঠিতে লেখেন, “অনেক আশা নিয়ে আমি এই চিঠি লিখছি। আপনার ছেলে নরেন্দ্র মোদী আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি যে কৃষি আইন পাশ করেছেন তা তিনি রদ করতে পারেন। আমার মনে হয়, নিজের মাকে কেউ “না” বলতে পারে না।” এখানেই শেষ নয়, ওই কৃষক আরো যোগ করেন, “গোটা দেশ আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে। একমাত্র মা’ই ছেলেকে আদেশ দিতে পারেন।” উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে কৃষি সংক্রান্ত কেন্দ্র সরকারের তিনটি বিল পাশ হয় পার্লামেন্টে। দীর্ঘদিন ধরেই এই আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে দেশের প্রায় ৪০টি কৃষক সংগঠন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *