নয়াদিল্লি: ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটদানে বিরত থেকেছে ভারত৷ রুশ আক্রমণের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়৷ শুক্রবার এই প্রস্তাবের সমর্থনে ১১টি দেশ ভোটদান করে৷ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ভেটো প্রয়োগ করে রাশিয়া৷ ভোটদানে বিরত থাকে ভারত, চিন এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী৷ একদিকে ভারত নিরাপত্তা পরিষদে ভোটদানে বিরত থেকেছে৷ অন্যদিকে ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনতে তৎপর বিদেশ মন্ত্রক৷ সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে ভারতের অবস্থান কী?
আরও পড়ুন- আরও কমল দেশের কোভিড গ্রাফ, মৃত্যু নিয়েও চিন্তা হ্রাস
এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ জ্যোতির্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভারত এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দিক থেকে ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে৷ একদিকে রয়েছে ভারতের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার আমেরিকা৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমেরিকার সহযোগিতা প্রয়োজন ভারতের৷ বিশেষ করে চিনকে আটকানোর ক্ষেত্রে আমেরিকাকে পাশে দরকার নয়াদিল্লির৷ অন্যদিকে রয়েছে রাশিয়া৷ যাদের কাছ থেকে যুদ্ধের সামগ্রী কেনে ভারত৷ এবার দুই স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারের মধ্যে ঝগড়া বাধলে ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে বাধ্য৷ নির্দিষ্ট কোনও দিকে ঝুঁকলেই ভারতের জাতীয় স্বার্থে আঘাত লাগবে৷ ভারতের কাছে শান্তির বানী প্রচার করা ছড়া আর কোনও উপায় নেই৷
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে ভারতের অন্যতন লক্ষ্য হল মানবিকতার ভিত্তিতে ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের কী ভাবে সংকীর্ণ পথে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, তা নিশ্চিত করা৷ এক্ষেত্রে রাশিয়া বা আমেরিকা কারোরই আপত্তি থাকার কথা নয়৷ কী ভাবে তাঁদের দ্রুত ফিরিয়ে আনা যায়, সেদিকেই ভারত নজর দিচ্ছে৷ কারণ এখানে একটা আতঙ্কের বিষয় রয়েছে৷ ‘মারতে চাইনি কিন্তু বিস্ফোরণের আঘাত গিয়ে লাগল ছাত্রের গায়ে৷’ যুদ্ধ লাগলে যা স্বাভাবিক৷ ফলে সেই ঝুঁকিটা ইউক্রেনে থাকা ভারতীয়দের নিতেই হবে৷ তাঁর কথায়, দু’দিকে দুটি বিশাল শক্তিশালী দেশ রয়েছে৷ যাঁরা দু’জনেই ভারতের এত কাছের বন্ধু৷ সেখানে কূটনৈতিক প্রভাব খাটানোর সুযোগ নেই ভারতের কাছে৷
এই পরিস্থিতিতে ন্যাটের ভূমিকা ঠিক কী হতে পারে? জ্যোতির্ময়বাবু জানান, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য দেশ নয়৷ যদিও সদস্য হওয়ার জন্য তারা উদগ্রীব৷ ফলে কৌশলগত দিক থেকে এখানে ন্যাটোর কোনও ভূমিকা নেই৷ ন্যাটোর আর্টিকেল ৫ অনুযায়ী, কোনও ন্যাটো সদস্যের গায়ে হাত পড়লে বাকি সদস্যরা এসে সাহায্য করবে৷ সেই দায়িত্ব এক্ষেত্রে ন্যাটোর নেই৷ তবে আমেরিকা ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবারহ করছে৷ মেডিক্যাল টিম, অ্যাডভাইজার পাঠাচ্ছে৷ সরাসরি রুশ সেনার বিরুদ্ধে ন্যাটো বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়লে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যাবে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>