৩৬ জেলার ১১৩ জন মহিলাকে ফোন করে হুমকি, অবশেষে পুলিশের জালে নাটের গুরু

৩৬ জেলার ১১৩ জন মহিলাকে ফোন করে হুমকি, অবশেষে পুলিশের জালে নাটের গুরু

মহিলাদের যখন তখন ফোন করে হুমকি দেওয়াই ছিল তাঁর নেশা। কখনও মানসিক নির্যাতন, কখনও আবার সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি। এমনভাবেই মহিলাদের ভয় দেখিয়ে মজা পেতেন বছর ৪৫-এর রবীন্দ্র কুমার মৌর্য। জন্মসূত্রে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা হলেও বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য অধিকাংশ সময়েই বাড়ি থেকে দূরে কোথাও না কোথাও গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হত তাকে। অন্যদিকে আবার লোকের বাড়িতে জলের পাম্প সাড়াইয়ের কাজ করে চলত পেট। এমতাবস্থায় হঠাৎই তার করা ভুয়ো ফোনের অভিযোগ নিয়ে সরাসরি পুলিশের দ্বারস্থ হন উত্তরপ্রদেশে কৌশাম্বীর বাসিন্দা এক মহিলা। তাঁর অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই শুরু হয় তদন্ত। কয়েকদিন পরেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে আসল নাটের গুরু এই রবীন্দ্র কুমার। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করতে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। জানা যায় গত কয়েক বছরে মোট ৩৬ টি জেলার ১১৩ জন মহিলাকে এইভাবে ফোন করে ভয় দেখিয়েছে রবীন্দ্র কুমার নামের ওই ব্যক্তি।

ইতিমধ্যেই পুলিশি তদন্ত শুরু হওয়ার পর জানা গিয়েছে কৌশাম্বি জেলাতে এই প্রথম ভুয়ো ফোনের রিপোর্ট লেখানোর ঘটনা ঘটলেও উত্তরপ্রদেশের বাকি ৩৬টি জেলায় মোট ১১৩ জন এমন মহিলা রয়েছেন যারা থানায় এসে সম্প্রতি এই ফোনে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। তদন্ত করে দেখা যায় ঐ সমস্ত ঘটনার পিছনেই হাত রয়েছে এই রবীন্দ্র কুমারের। ইতিমধ্যেই তার বাড়ি তল্লাশি করে পুলিশ একগুচ্ছ সিম কার্ড এবং বেশ কয়েকটি ভুয়া প্রমাণপত্র খুঁজে পেয়েছে।

তবে পুলিশ সূত্রের খবর, রবীন্দ্র কুমারকে গ্রেফতার করা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। দাগী অপরাধীদের মতই অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং সচেতন এই ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার জন্য একটি জাল তৈরি করে। পুলিশ আধিকারিকদের কয়েকজনই আম ব্যবসায়ী সেজে রবীন্দ্র কুমারের সঙ্গে প্রথমে যোগাযোগ করে। তারা প্রথমে আম সরবরাহ নিয়ে কথা বলার জন্য রবীন্দ্র কুমারের সঙ্গে দেখা করতে চান। তখন রবীন্দ্র কুমার তার বর্তমান ঠিকানা দিলে দেখা যায় জঙ্গলের একদম ধারে একটি বাড়িতে বসবাস করছে সে। সেখানেই বৃহস্পতিবার রাতে হানা দিয়ে হাতেনাতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। এর আগেও তাকে একবার আটক করে কাউন্সেলিংয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে যে কোনও লাভ হয়নি সম্প্রতি তারই প্রমাণ মিলল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × four =