চরমে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট, যে কোন মুহূর্তে বন্ধ হতে পারে মেট্রো পরিষেবা

চরমে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট, যে কোন মুহূর্তে বন্ধ হতে পারে মেট্রো পরিষেবা

নয়াদিল্লি: একদিকে অসহনীয় গরম, অন্যদিকে তীব্র বিদ্যুৎ সংকট, সবে মিলে বর্তমানে বেহাল অবস্থা রাজধানী দিল্লির। বিগত কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল উৎপাদনের অভাবে রাজধানীতে যে কোন মুহূর্তে হতে পারে বিদ্যুৎ বিপর্যয়। সেই কথাই সত্যি প্রমাণিত হয়ে দিল্লির একাধিক এলাকায় শুরু হয়েছে লাগাতার লোডশেডিং। কিন্তু শুক্র সকালেই জানা গেল পরিস্থিতি এতটাই চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রাজধানীর মেট্রো পরিষেবা যে কোন মুহূর্তে বন্ধ হতে পারে। আর তাই শুক্রবার সকালেই দিল্লির বিদ্যুৎ মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন একটি জরুরি বৈঠকে বসেছেন। মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কয়লার আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই এই বিপর্যয়।  আর তাই ইতিমধ্যেই রাজধানীর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত কয়লার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রকেও অনুরোধ করেছে আপ সরকার।

এই সংকট প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই একটি সরকারি বিবৃতি জারি করেছে দিল্লি সরকার, যেখানে বলা হয়েছে, দাদরি-২ এবং উনচাহার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার কারণে আগামী ২৪ ঘন্টা দিল্লি মেট্রো এবং দিল্লির সরকারি হাসপাতালসহ একাধিক প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের সমস্যা হতে পারে।’ এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিদ্যুৎমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, দিল্লিতে বিদ্যুতের চাহিদা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এই দুটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রই মেটায়। সেক্ষেত্রে এই দুই কেন্দ্রে কয়লার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তার জেরেই এই বিপর্যয়। তবে রাজ্যবাসীকে আশ্বাস দিয়ে তিনি এদিন এও বলেন, সরকার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং তারা নিবিড়ভাবে পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। রাজধানীর কিছু এলাকার মানুষ যাতে এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন না হয় তার জন্য সম্ভাব্য সমস্ত ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রদুটি দিল্লির বিস্তীর্ণ অঞ্চল যাতে অন্ধকারে চলে না যায় তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং আসন্ন গ্রীষ্মের মরশুমে দিল্লির মেট্রো রেল কর্পোরেশন, সরকারি হাসপাতাল এবং স্থানীয় নাগরিকদের অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য এদের ভূমিকা অপরিহার্য।

জানা গিয়েছে, ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কর্পোরেশন দাদরি-২ এবং ঝাজ্জারের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলি প্রতিষ্ঠাই করা হয়েছিল যাতে দিল্লিতে বিদ্যুতের ঘাটতি না দেখা যায়। কিন্তু সম্প্রতি এই দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে খুব কম কয়লা মজুদ রয়েছে বলেই সমস্যার সূত্রপাত হয়েছে। ন্যাশনাল পাওয়ার পোর্টালের দৈনিক কয়লা রিপোর্ট অনুযায়ী এই দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র তীব্র কয়লার ঘাটতির সম্মুখীন। আর তাতেই দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকা এই প্রচন্ড গরমের মধ্যেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার শিকার হয়েছেন।

তবে একা দিল্লি নয়, রাজধানীসহ দেশের একাধিক রাজ্য এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। সৌজন্যে কয়লা সরবরাহের ঘাটতি। এই ঘটনা প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশন জানিয়েছে, শুধু দিল্লি নয় সারা দেশের থার্মাল প্লান্টগুলিতে কয়লার ঘাটতির সমস্যা দেখা দিয়েছে। মূলত এই কারণেই আগামী দিনে দেশে আরও বড় বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × five =