নয়াদিল্লি : পাক জঙ্গিদের মদদ দেওয়ায় এবং সন্ত্রাসবাদি অর্থায়ন ও অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনানো দিল্লির এক বিশেষ আদালত। যদিও আদালতের কাছে এদিন মালিকের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছিল এন আই এ। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থা সেই দাবি খারিজ করে মালিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য, সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১৯ মে মালিককে দোষী সাব্যস্ত করে নেশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বিশেষ আদালত। এরপর আদালতের কাছে বারবার মালিকের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানায় এনআইএ তথা নেশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি। অন্যদিকে ইয়াসিন মালিকের সাজা ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে উপত্যকায়। মালিকের সমর্থনকারীরা ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল প্রদর্শন করতে শুরু করেছেন। পাশাপাশি এই মামলায় কি রায় ঘোষণা হয় তা নিয়ে বুধবার সকাল থেকেই যথেষ্ট উদ্বেগজনক পরিস্থিতি ছিল দিল্লির এই বিশেষ আদালত চত্বরে। আদালতের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যাতে আদালত চত্বরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। আদালত চত্বরে আনা হয় ডগ স্কোয়াডকেও। এরপর বিকেল ৫:৪০ মিনিটে ইয়াসিন মালিককে আদালতে পেশ করে এনআইএ আধিকারিকরা। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাদা শোনায় দিল্লির ওই বিশেষ ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি আদালত। সেইসঙ্গে তাঁকে বেশ কিছু টাকা জরিমানাও করা হয়েছে বলে খবর।
ইয়াসিনের বিরুদ্ধে ইউপিএ ধারায় জঙ্গী কার্যকলাপ, সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, জঙ্গী সংগঠনের প্রত্যক্ষ সদস্যপদ গ্রহণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সেইসঙ্গে এনআইএ আধিকারিকদের অভিযোগ, কাশ্মীরের স্বাধীনতা সংগ্রামের নাম করে এক বিরাট জঙ্গিগোষ্ঠী বানিয়েছে ইয়াসিন এবং সেই কারণে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে তা সে জঙ্গী কার্যকলাপে ব্যবহার করছিল বহুদিন ধরে। গত ১০ মে এই সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ নিজ মুখে কবুল করে ইয়াসিন এবং ১৯ মে ইয়াসিনকে দোষী সাব্যস্ত করে এনআইএর বিশেষ আদালত।
সূত্রের খবর ইয়াসিন এদিন আদালতকে জানিয়েছেন যে তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে অস্ত্র ছেড়েছেন এবং তার পর থেকে তিনি মহাত্মা গান্ধীর প্রদর্শিত পথেই চলছেন। তিনি আরও জানান এরপর তিনি আর রাজনীতি ও করবেন না। কিন্তু আদালত যদি তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন তাতে তার আপত্তি নেই।