নয়াদিল্লি: দু’দিনের সফরে ভারতে এসেছেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ৷ ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে আজ সাক্ষাৎ করেন তিনি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মাঝে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ান প্রতিনিধির এই বৈঠক নিয়ে বিস্তর কৌতূহল। প্রথম থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল যে, দু’জনের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়েই আলোচনা হতে চলেছে। সেটাই হয়েছে। জানা গিয়েছে, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তাঁকে বার্তা দিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার।
আরও পড়ুন- চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করলে রাশিয়া রক্ষাকর্তা হবে না! ভারতকে ‘বার্তা’ আমেরিকার
যে দিন থেকে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলা শুরু করেছে প্রায় সে দিন থেকেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত এই বিষয় নিয়ে মুখ খোলেনি। ভোটাভুটিতে অংশও নেয়নি নয়াদিল্লি যেখানে আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। ভারত প্রথম থেকেই জানিয়ে আসছে যে তারা সংঘর্ষের বিরুদ্ধে কিন্তু আলোচনা চায়। এদিনও রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠকে এই বার্তাই দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর পক্ষে সর্বদা আছে ভারত। কোনও ভাবেই তারা কোনও যুদ্ধ চায় না। এদিকে রাশিয়ার তরফ থেকেই বিষয়টি ভেবে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভারত এবং রাশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয় নিয়েও এই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে খবর।
এই বৈঠক নিয়ে আলোচনা যখন চলছে তখনই আমেরিকা চরম হুঁশিয়ারি দেয় ভারতকে। রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যে ভারতের পক্ষে ভাল হবে না তার সতর্কতা দেওয়া হয়। আমেরিকা স্পষ্ট জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে তেল কিনলে ফল ভুগতে হবে ভারতকে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এই ইস্যুতে জানান, তারা কিছুতেই চান না ভারত এই রকম একটা সময়ে রাশিয়ার থেকে তেলে কেনার পরিমাণ বাড়িয়ে দিক। আসলে তারা যুদ্ধ ইস্যুতে ভারতকে পাশে চায়। আর তাদের পাশে দাঁড়াতে গেলে ভারতকে রাশিয়ার বিরোধিতা করতে হবে। সেটাই ভারত করছে না। এই নিয়ে আলাদা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে মত অনেকের।
আরও পড়ুন- বিধি প্রত্যাহারের প্রথম দিনেই দেশে বাড়ল সংক্রমণ! বৃদ্ধি মৃত্যুরও
আসলে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পরেই আমেরিকা সহ ইউরোপের একাধিক দেশ রাশিয়ার উপর গুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে৷ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপের একাধিক দেশ৷ অর্থনৈতিক চাপে পড়ে ভারতকে নয়া প্রস্তাব দিয়েছে পুতিন প্রশাসন। জলের দরে ভারতের কাছে তেল বিক্রি করতে চায় তারা। ভারত যাতে রাশিয়ার কাছ থেকে আরও বেশি করে তেল আমদানি করতে পারে তার জন্য অনেকখানি দাম কমাতেও রাজি রয়েছে মস্কো।