গুয়াহাটি: অসমের ওয়াং জাতীয় উদ্যানে জলাশয়ের সামনে একটি গণ্ডারকে দেখতে পান বনকর্মীরা। ওই গণ্ডারের শিং ছিল না। সেখান থেকে অঝোরে রক্তপাত হচ্ছে। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। বনকর্মীরা দেখেন, মাঝে মাঝেই গণ্ডারটি জলাশয়ের সামনে আসছে, আবার পাগলের মতো উঠে দৌড়াচ্ছে। প্রথমে বনকর্মীরা ভেবেছিলেন, অন্য গণ্ডারের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে সিং ভেঙে গিয়েছে। পরে বুঝতে পারেন, চোরা শিকারীরা গণ্ডারে শিং কেটে নিয়ে গিয়েছে।
বন আধিকারিক প্রদীপ্ত বড়ুয়া জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা ভেবেছিলাম, অন্য গণ্ডারের সঙ্গে মারামারির কারণে গণ্ডারের শিংটি ভেঙে গিয়েছে। গণ্ডারটি খুব কষ্ট পাচ্ছিল। যন্ত্রণায় এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছটফট করছিল। এরপরেই আমরা প্রধান বন সংরক্ষককে বিষয়টি জানাই। গুয়াহাটি থেকে বন আধিকারিকদের একটি দল আসে। দলটি গণ্ডারটি শান্ত করে। তার কাছে গিয়ে দেখতে পায়, গণ্ডারটির গায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে তার শিংটি কেটে ফেলা হয়েছে। এর থেকেই বনকর্মীরা বুঝতে পারেন, চোরাশিকারীরা শিংটি কেটে নিয়েছেন। বনদফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, ২০১৭ এর পর এই জাতীয় উদ্যানে চোরাশিকারীর এই প্রথম হদিশ পাওয়া গেল। চোরাশিকারীরা গণ্ডারের শিং কেটে নেওয়ার আগে তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল।
বন আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গণ্ডারটির চিকিৎসা শুরু হয়েছে। গণ্ডারটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। ক্ষত স্থানে কোনও ম্যাগট জন্মায়নি। প্রদীপ্ত বড়ুয়া জানিয়েছেন, গণ্ডারটির ওপর ২৪ ঘণ্টা নজর রাখা হয়েছে। দাবাং ও শোনিতপুর জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদীর উত্তরে ওয়াং জাতীয় উদ্যান অবস্থিত। এখানে গত চার বছরে এক শৃঙ্গ গণ্ডার প্রায় ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসেই কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে একটি স্ত্রী একশিঙ্গ ঘণ্টারের দেহ পাওয়া যায়। বন আধিারিকরা আশঙ্কা করেছেন, ওই গণ্ডারটিকে চোরা শিকারীরা মেরেছে। কারণ তারও শিং কাটা ছিল।