নয়াদিল্লি: করোনা আবহে পরপর দু’বছর বন্ধ ছিল চারধাম যাত্রা। কিন্তু মহামারী কাটিয়ে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এখন আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক। আর তাই পূর্বনির্ধারিত দিনেই গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩ মে থেকে শুরু হয়েছে চারধাম যাত্রা। আর সেই যাত্রার তিন দিনের মাথায় আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার দীর্ঘ দুই বছর বাদে পূর্ণার্থীদের জন্য খুলছে কেদারনাথের দরজা। জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই চারধামের তীর্থযাত্রীরা বিগ্রহ দর্শনের জন্য পৌঁছে গেছেন কেদারনাথে। তাঁদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার সকালে পুণ্যস্নানের হাত ধরে খুলে দেওয়া হবে এই মন্দিরের দরজা। ২০১৯ সালের পর ২০২০ এবং ২১ সালে পুণ্যার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল এই মন্দির। একমাত্র মন্দিরের প্রধান পুরোহিতসহ অন্যান্য প্রমুখদেরই সেই সময়ে এই মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বিগ্রহ আরাধনা করার জন্য।
গত ৩ মে থেকে শুরু হয়েছে চারধাম যাত্রা। করোনার বিধিনিষেধ মেনে এবং সেইসঙ্গে সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখেই এই যাত্রার পরিকল্পনা নিয়েছেন চারধাম ট্রাস্টি বোর্ড। করোনা সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে এই বছর চারধামের দৈনিক তীর্থযাত্রীদের সংখ্যাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, এই বছরের চারধাম যাত্রায় প্রত্যেকদিন বদ্রীনাথে ১৫ হাজার, কেদারনাথে ১২ হাজার, গঙ্গোত্রীতে ৩ হাজার এবং যমুনোত্রীতে ৪ হাজার তীর্থযাত্রী প্রবেশের অনুমতি পাবেন। অন্যদিকে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার কারণেই এই বছর চারধামে অন্যবারের তুলনায় পুণ্যার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলেই মনে করছেন ট্রাস্টি বোর্ড। সেক্ষেত্রে বাড়তি ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে খবর। ইতিমধ্যেই দেশ তথা বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কেদার-বদ্রীতে পৌঁছে গিয়েছেন পূণ্যার্থীদের দল। আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার কেদারনাথ দর্শনের পর থেকেই শুরু হবে তাঁদের এই চারধাম যাত্রা।
চারধামের বাকি মন্দিরগুলির থেকেও কেদারনাথ মন্দিরে প্রতিবারেই দর্শকের সংখ্যা বেশি থাকে। এই মন্দির দর্শনের মূল আকর্ষণ হল শিবলিঙ্গের বর্ণ বদল। বলা হয় দিনে চারবার দেবাদিদেব মহাদেবের এই বিগ্রহের রঙ পরিবর্তিত হয়। সূর্যোদয়ের আগে বিগ্রহের রং একরকম থাকে এবং সূর্যোদয়ের পরে বিদ্রোহের রং পাল্টে আর একরকম হয়। আমার দুপুরে পাল্টে যায় বিগ্রহের রং যখন সূর্য ঠিক মাঝ আকাশে থাকে। অন্যদিকে বিকেলে যখন সূর্যাস্তের সময় হয় তখন অন্য রঙে রঙিন হয়ে ওঠেন মহাদেব। প্রতিবছরই কেদারনাথ মন্দিরের বিগ্রহ আরাধনার দায়িত্ব দেওয়া হয় একজন প্রধান পুরোহিতকে। এইরকম প্রায় ৩০০ জন পুরোহিত কেদারনাথ মন্দিরের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করেন। জানা যাচ্ছে, এই বছর মহাদেবের পুজো আরতির দায়িত্ব পেয়েছেন টি গঙ্গাধর লিংকা। বুধবার সকাল ছটা থেকে শুরু হবে কেদারনাথ মন্দিরের পূজা পাঠ এবং সেই পুজো শেষে পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে কেদারের দরজা।