নয়াদিল্লি: কংগ্রেস কি গান্ধী পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ? গান্ধী পরিবার ছাড়াও ভাবতে হবে কংগ্রেসকে। স্টিয়ারিং কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়ে আজাদের সুরেই এবার গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন কংগ্রেসের আরও এক প্রবীণ নেতা আনন্দ শর্মা। উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই জম্মু-কাশ্মীরের প্রচার কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন কংগ্রেসের প্রবীণ তথা শীর্ষস্থানীয় নেতা গুলাম নবী আজাদ। তাঁর দাবি, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের তরফ থেকে তাকে যে পদ দেওয়া হয়েছে তা অপমানজনক। সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই প্রচার কমিটির দায়িত্ব পাওয়ার দু’ঘণ্টার মধ্যেই ইস্তফা দেন জি ২৩ এর অন্যতম মুখ আজাদ। সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হয়েছে রবিবার যখন আজাদের দেখানো পথে হেঁটেই স্টিয়ারিং কমিটি থেকে এই ইস্তফা দিয়েছেন অপর প্রবীণ নেতা আনন্দ শর্মা। সম্প্রতি তাঁকে হিমাচল প্রদেশের পর্যবেক্ষক কমিটির প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব পালন করবেন না বলে গতকাল জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই দলের তথা গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে আনন্দ শর্মাকে। এমনকি তিনি কংগ্রেসের গান্ধী পরিবার নির্ভরশীলতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এদিন।
রবিবার বিকেলে জাতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘গান্ধী পরিবারের বাইরেও ভাবা উচিত কংগ্রেসের। বিশেষত এখন যখন দলের জাতীয় সভাপতি হতে অস্বীকার করেছেন রাহুল গান্ধী তখন দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বিকল্প কোন মুখ ভাবা উচিত।’ এরপরেই তিনি দলের শীর্ষ পদ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘কংগ্রেস কি শুধুই দুটো নামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ? আমরা কি কংগ্রেসের ইতিহাস ভুলে যাচ্ছি না?’ প্রসঙ্গত এখানে তিনি দুটি নাম বলতে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী কিংবা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর কথা বলেছেন। কারণ বিগত কয়েক বছর ধরেই জাতীয় কংগ্রেসের সভাপিতত্বের পদ এই তিনজনের মধ্যেই আটকে রয়েছে। কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্ত নিয়েই সম্প্রতি প্রশ্ন তুলতে প্রশ্ন তুলেছেন আনন্দ শর্মা।
অন্যদিকে সরাসরি গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করায় জাতীয় রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই চাউর হয়েছে কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিতে পারেন আনন্দ শর্মা। এদিন সেই প্রসঙ্গেও মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতাকে। তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ আমার দেওয়া ওই চিঠি রয়েছে, ততক্ষণ আমরা প্রাসঙ্গিক রয়েছি। আমরা বিক্ষুব্ধ নই, আমরা সংস্কারের পক্ষে। কংগ্রেসের নীতি-সংবিধান অনুসরণ করে চলার কথা বলা কী অপরাধ? আমি কংগ্রেসের সদস্য ছিলাম এবং আজীবন কংগ্রেসের সদস্য থাকব। আমি নিজের আত্মসম্মান খোয়াতে পারব না। ইস্তফা দেওয়া ছাড়া আমার হাতে আর কোনও অপশন ছিল না।’