বিচারকের আসনে সবজি বিক্রিতার মেয়ে, টপকে এসেছেন কঠিন লড়াই

বিচারকের আসনে সবজি বিক্রিতার মেয়ে, টপকে এসেছেন কঠিন লড়াই

db1c311d4221c3aa4e6fd13139ece803

ইন্দোর: দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে বেড়ে ওঠা তাঁর৷ তথাকথিত সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানোর সৌভাগ্য হয়নি৷ বাবা সামান্য একজন সব্জি বিক্রেতা। সেই কাজে  সাহায্য করেন তাঁর মা৷ মাথার উপর রয়েছে বড় দাদা৷ তিনি ইন্দোরের বালি বাজারের মুটের কাজ করে৷ আর বিয়ে করে সংসার সামলাচ্ছেন ছোট বোন৷ ফলে আর্থিক অনটন তাঁদের নিত্যসঙ্গী৷ ছোট থেকেই দেখেছেন, নুন আনতে পান্তা ফুরোয়৷ কিন্তু সেই প্রতিবন্ধকতাকে কখনই স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হতে দেননি বছর ২৫-এর অঙ্কিতা নাগর৷ জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জেদকে পাথেয় করে এগিয়ে গিয়েছেন৷ যাঁর ফলও মিলেছে হাতেনাতে৷ সিভিল জাজ পরীক্ষার সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন অঙ্কিতা৷ পরিবারের সমর্থন,  দৃঢ় সংকল্প এবং কঠিন অধ্যাবসায়ের জোড়ে তিনি আজ সফল৷ সবজি বিক্রেতার মেয়েই আজ লক্ষ লক্ষ তরুণীর অনুপ্রেরণা৷ 

আরও পড়ুন- একদিনে দেশে আক্রান্ত বাড়ল ৭%, অ্যাকটিভ কেসেও বাড়ল চিন্তা

সিভিল জাজ পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য দিনে ১০ ঘন্টা পড়াশোনা করতেন অঙ্কিতা৷ তিনি জানান, এসসি কোটার মেধা তালিকায় তাঁর ব়্যাঙ্ক পঞ্চম। এক সপ্তাহ আগেই অবশ্য পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে৷ এক আত্মীয়ের আকষ্মিক মৃত্যুর জেরে সময় মতো রেজাল্ট দেখে উঠতে পারেননি তিনি৷ কিন্তু, বুধবার যখন রেজাল্ট দেখলেন, ততক্ষণে তাঁর জীবন বদলে গিয়েছে৷ 

অঙ্কিতা জানান, তাঁর বাবা-মা ইন্দোরের মুসাখেদি এলাকায় ঠেলা গাড়ি নিয়ে ঘুরে ঘুরে সবজির বিক্রি করেন৷ আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও বাবা-মা তাঁকে সবসময় পড়াশোনার জন্য উৎসাহ জুগিয়ে গিয়েছেন৷ অঙ্কিতা যাতে মন দিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন, তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে গিয়েছেন৷ অঙ্কিতার কথায়, বাবা প্রতিদিন ভোর ৫টায় সবজির গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন৷ ৮টা নাগাদ তাঁর সঙ্গে যোগ দিতেন মা। সারা দিন তেতেপুড়ে সবজি বিক্রি করেন তাঁরা৷ অনেক সময় তিনিও বাবা-মাকে তাঁদের কাজে সাহায্য করতেন৷ তবে সবের মাঝে এক মুহূর্তের জন্যেই নিজের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি৷ নিয়ম করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন৷  

কষ্টের সেই দিন এখন শেষ হওয়ার পালা৷ এবার মধ্যপ্রদেশে সিভিল জাজ হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন অঙ্কিতা৷ তাঁর এই কৃতিত্বে গর্বিত গোটা পরিবার৷ অঙ্কিতার মা বলেন, ‘‘আমি পড়াশোনা করতে পারিনি৷ কিন্তু আমি সবসময় চেয়েছি আমার মেয়ে যেন উচ্চশিক্ষিত হয়৷ অনেক কষ্ট হয়েছে, তবুও ওঁর পড়াশোনার কোনও খামতি রাখিনি৷’’ বাবা-মা সহ গোটা পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞ তিনিও৷