নয়াদিল্লি: গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই জানা গিয়েছিল দেশে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারের গণ্ডি পার করেছে। সেই একই ধারা বজায় রেখে শুক্রবার ফের কিছুটা বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ। শুক্র সকালে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের করোনার হিসাব অনুযায়ী, দেশে গত একদিনে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩৭৭ জন। বৃহস্পতিবার এই সংখ্যাটাই ছিল ৩৩০৩। অর্থাৎ আপাতদৃষ্টিতে দেখতে গেলে সামান্যই বেড়েছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু এই মুহূর্তে যেটা সবথেকে বেশি চিন্তার তা হল দেশে করোনার অ্যাক্টিভ কেস এবং পজিটিভিটি রেট। গত সপ্তাহ থেকেই হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে দৈনিক সংক্রমণের হার। সেই ধারা অব্যাহত থাকল শুক্রবারও। এদিকে দেশের অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা পার করল ১৭ হাজারের গণ্ডি। এক ধাক্কায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে অ্যাকটিভ কেস বেড়েছে ৮২১। আর তাতেই রীতিমতো উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, আগের দিনের থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে করোনায় দৈনিক মৃতের সংখ্যা। তবে এদিনের দৈনিক মৃতের রিপোর্টে এসেছে বড়সড় বদল। দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক মৃতের সংখ্যার নিরিখে প্রথম স্থানে ছিল দক্ষিণের রাজ্য কেরল। কিন্তু শুক্রবার সকালের করোনা রিপোর্টে দেখা গেল মৃতের সংখ্যার নিরিখে কেরলকে ছাপিয়ে গিয়েছে দক্ষিণের আরও একটি রাজ্য কর্ণাটক। গত একদিনে কেরলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। কিন্তু গত একদিনে কর্নাটকে করোনার বলি হয়েছেন ৪২ জন। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রে প্রাণ হারিয়েছেন দুজন করে।
তবে মৃতের সংখ্যা যাই হোক না কেন আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে এই মুহূর্তে চিকিৎসকদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দিল্লির লাগামছাড়া সংক্রমণ। গত সপ্তাহ থেকেই রাজধানী দিল্লিতে হুহু করে ছড়াতে শুরু করেছে এই ভাইরাস। বৃহস্পতিবারের রিপোর্টে জানা গিয়েছিল দিল্লিতে একদিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১২০০ জন। কিন্তু শুক্রবার সকালের করোনা রিপোর্ট জানাচ্ছে গত 24 ঘণ্টায় দিল্লিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪৯০ জন। একদিনে প্রায় আড়াইশো বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। একদিনে দিল্লিতে সংক্রমণের হার বেড়েছে ৪.৬২ শতাংশ। বুধবার পর্যন্ত যেখানে দিল্লির পজিটিভিটি রেট দাঁড়িয়ে ছিল ৪.৫০ শতাংশে। তবে সেই সঙ্গেই জানা যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা যাই হোক না কেন এই মুহূর্তে অধিকাংশ আক্রান্তই রয়েছেন হোম আইসোলেশনে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই উপসর্গহীন। এদের মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ রোগীকেই এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। অন্যদিকে রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক মৃতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত তেমন উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছায়নি বলে খবর। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে দিল্লিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। সেটাই এখনও পর্যন্ত চলতি সপ্তাহের সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যা।