শান্তবোমালি: ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন থেকেই উত্তাল বঙ্গোপসাগর। এই ঘূর্ণিঝড়ের আগমনবার্তার শুরুতেই আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছিলেন যে, আসনি সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলবে ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে। সেই কথা মাথায় রেখেই বিগত কয়েকদিন সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা প্রায় ফাঁকা অন্ধপ্রদেশে। কিন্তু হঠাৎই বুধবার সকালে উত্তর উপকূলীয় অন্ধপ্রদেশ জেলার শান্তবোমালির কাছে সমুদ্রের জলের তোড়ে ভেসে এল সোনালী রংয়ের প্রমাণ আকৃতির একটি রথ। হঠাৎ দেখলে রথটিকে সোনার রথ বলেই মনে হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রাক্কালে এই ধরণের অদ্ভুত ঘটনায় কার্যত হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই এই সোনার রথ দেখতে ওই সমুদ্রের পাড়ে ঘূর্ণিঝড় উপেক্ষা করেই ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোনালী রঙের প্রলেপযুক্ত এই রথটিকে দেখতে অনেকটা ভাসমান পূজা মন্দিরের মতো। পুলিশ আধিকারিকদের সন্দেহ এটি মায়ানমার থেকে ভেসে এসেছে। একটি তারিখও খোদাই করা রয়েছে এই সোনার রথের গায়ে। সোনালী রঙের ওপর কালো রং দিয়ে লেখা রয়েছে ১৬ জানুয়ারি, ২০২২। বুধবার ভোরে সমুদ্রের ধারে এই রথটিকে ভাসতে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। এরপর তারাই কয়েকজন মিলে বিশাল আকৃতির ওই রথটিকে টেনে পাড়ে তোলে। বিষয়টি জানানো হয় স্থানীয় পুলিশ স্টেশনেও। কিছুক্ষণ বাদেই ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন পুলিশ আধিকারিকরা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রাক্কালে এলাকায় সাধারণ মানুষ সমুদ্রের ধারে ভিড় জমালে সেই ভিড়ও ফাঁকা করেন পুলিশ আধিকারিকরা। তবে অতর্কিত এই ঘটনায় হতবাক পুলিশও।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভাসমান এর রথটিকে দেখতে ঠিক একটি মঠের মত। থাইল্যান্ড, জাপান, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়াতে এই ধরনের সোনালী রংয়ের একাধিক মঠ রয়েছে। তেমনই কোনও মঠের আকারে বানানো হয়েছিল এই রথ। হলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, ভারতের আশেপাশের কোন প্রতিবেশী দেশ থেকে ভেসে আসতে পারে এই সোনালী রথ।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় এসআই জানিয়েছেন, টিনের পাত দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রথটি। টিনের উপরে সোনালী রং দেওয়ার হঠাৎ দেখলে রথটিকে সোনার রথ বলেও ভুল হতে পারে। এই রথের গায়ে আবার অন্য ভাষায় কিছু লেখা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেখে মনে হচ্ছে এটা মায়ানমারের ভাষা। তবে রথটির আকার, আকৃতি দেখে জাপান, থাইল্যান্ড কিংবা মালয়েশিয়ার কোনও মন্দিরের অনুরূপ বলে মনে হচ্ছে। আশানি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এই মুহূর্তে উত্তাল সমুদ্র। বেড়েছে সমুদ্রের তেজ এবং ঢেউয়ের দাপট। তার জেরেই রথটি ভেসে অন্ধপ্রদেশের ওই এলাকায় এসে পড়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
অন্যদিকে আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর এই মুহুর্তে তীব্র ঘূর্ণিঝড় আসানি শক্তি হারিয়ে শুধুমাত্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে এটি একটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ইতিমধ্যেই পঞ্জের, বিশাখাপত্তনমসহ অন্যান্য সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে সর্তকতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া বিশাখাপত্তনম এবং তামিলনাড়ুর বেশ কয়েকটি উড়ান বাতিল করা হয়েছে। বুধবার সকালে অন্ধ্রের সমস্ত উড়ান বাতিল করেছে ইন্দিগো। তবে আর বড়সড় কোনও দুর্যোগের আশঙ্কা নেই বলেই মনে করছেন আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিকরা।