নয়াদিল্লি: একদিকে যখন পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি দেখা দিয়েছে ঠিক তখনই প্রবল বৃষ্টির জেরে বন্যা পরিস্থিতি মহারাষ্ট্র, গুজরাট, তেলেঙ্গানা, হিমাচল প্রদেশের মত একাধিক রাজ্যে। বিগত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে নাগারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্রে। আর তার জেরেই বন্যা পরিস্থিতি রাজ্যজুড়ে। জানা যাচ্ছে এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে এই প্রবল বৃষ্টির কারণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্ততপক্ষে ৯৯ জন। একটানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন বাণিজ্য নগরী মুম্বই। এছাড়াও পালঘর, পুনে, সাতারা, আকোলার মতো একাধিক জেলায় ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে সপ্তাহভর। জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের এই সমস্ত জেলায় এনডিআরএফ তথা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর এবং এসডিআরএফ তথা রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের দলগুলিকে ত্রাণ এবং উদ্ধার কার্যের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এর সঙ্গেই খবর মিলছে আগামী কয়েকদিনও মহারাষ্ট্রের একাধিক জেলায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই পালঘর, পুনে, সাতারায় জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। অন্যদিকে মুম্বাই, থানে, আকোলার জন্য জারি হলুদ সতর্কতা।
জানা যাচ্ছে, বর্তমানে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলায় উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন এনডিআরএফের ১৪ টি দল এবং এসডিআরএফের ছটি দল। প্রবল বৃষ্টিতে এখনো পর্যন্ত এই রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৯৯ জন, যার মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে চার জনের। এছাড়া প্রবল বৃষ্টির কারণে এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে ১৮১ টি পশুরও মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। জলমগ্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৭৯৬৩ জনকে। তবে আগামী কয়েক দিন চলবে এই দুর্যোগ। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর এমনটাই। আর তাই আগেভাগেই মুম্বই, থানে, রায়গড়, রত্নগিরি, সিন্ধুদুর্গ, নাসিক, কোলাপুর, আকোলা, অমরাবতী, ভান্ডারা, বুলধানা, চন্দ্রপুর, গড়চিরোলি, গোন্ডিয়া, নাগপুর, ওয়ার্ধা, ওয়াশিম এবং ইয়াবতমালে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে গুজরাটের বেশ কয়েকটি অংশে গত ২৪ ঘন্টায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং জেলার কয়েকটি নদী প্লাবিত হওয়ায় নবসারির বেশ কয়েকটি অঞ্চল হাঁটু-গভীর জলে প্লাবিত হয়েছে। কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কর্তৃপক্ষ তাপি এবং ভদোদরা জেলায় আটকে পড়া ৪৫ জনকে উদ্ধার করেছে। গত চার দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) রাজ্যের উত্তর ও দক্ষিণ অংশ এবং সৌরাষ্ট্র অঞ্চলসহ গুজরাটের বেশ কয়েকটি জায়গায় আগামী দিনেও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ গুজরাটের নবসারি জেলার বনসাদা তালুকে ৩৯৪ মিলিমিটার ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। একই সময়ে, ভালসাদ জেলার কাপরাদা ও ধরমপুর তালুকে যথাক্রমে ৩৭৭ মিমি এবং ৩৪০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে অতিবৃষ্টির জেরে তেলঙ্গানার ভদ্রাচলম শহরের গোদাবরী নদীতে ক্রমবর্ধমান জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় মোকাবেলা দফতরের কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার ফলে তেলেঙ্গানার বিভিন্ন স্থানে ২০,০০০ এরও বেশি লোককে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভদ্রদ্রী-কোঠাগুডেম এবং রাজ্যের অন্যান্য জেলার বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হইয়েছে, দক্ষিণের এই রাজ্যে ২২৩টি ক্যাম্পে এই মুহূর্তে মোট ১৯ হাজার ৭১ জনকে স্থানান্তর করা হয়েছে।