Aajbikel

মোদিকে নিয়ে বিবিসি'র তথ্যচিত্রে বিতর্ক, তথ্যচিত্র না দেখানোর নির্দেশ দিল কেন্দ্র!

 | 
BBC Documentary  India: The Modi Question

নিজস্ব প্রতিনিধি:  বিবিসি'র তথ্যচিত্র নিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। তারা যে তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছে তার দ্বিতীয় পর্বে গুজরাট হিংসার ঘটনা রয়েছে বলে জানতে পেরেছে কেন্দ্র। যে তথ্যচিত্র সামনে এলে নতুন করে দেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে বলে কেন্দ্র মনে করছে। আর সেই কারণেই তথ্যচিত্রের লিংক ও এই সংক্রান্ত নানা মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। ইউটিউব এবং টুইটারকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তথ্যচিত্রটি ভারতে দেখা না গেলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা যাবে। বিষয়টি নিয়ে বিবিসি'র দাবি বেশ গবেষণা করেই এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে। যদিও কেন্দ্র মনে করছে এই তথ্যচিত্র ভারতে দেখা গেলে সমাজে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটেনের 'হাউস অফ লর্ডস'-এর এক সদস্য পর্যন্ত তথ্যচিত্রটির সমালোচনা করেছেন।

তাঁর দাবি, মুসলিমরা ভারতে নিরাপদেই রয়েছেন। যদি মুসলিমরা এ দেশকে নিরাপদ বলে মনে না করতেন তবে তাঁরা দেশ ছেড়ে চলে যেতেন। এমনটাই বলেছেন ব্রিটেনের 'হাউস অফ লর্ডস'-এর সদস্য লর্ড রামি রেঞ্জার।
বিবিসি'র ওই ডকুমেন্টরি সিরিজটির নাম 'দ্যা মোদি কোয়েশ্চেন'। এবার এই ডকু সিরিজটির দ্বিতীয় পর্ব যাতে সম্প্রচার না করা হয় বিবিসির কাছে সেই আবেদন করলেন ব্রিটেনের 'হাউস অফ লর্ডস'-এর সদস্য লর্ড রামি রেঞ্জার। তিনি জানিয়েছেন এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্বের সম্প্রচার বন্ধ না করলে ব্রিটিশ হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে তা আরও বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে এই ধরনের সিরিজ তৈরির পিছনে পাক বংশোদ্ভূতদের কোনও ভূমিকা রয়েছে কিনা সেটাও জানতে চেয়েছেন তিনি।

গত মঙ্গলবার এই সিরিজের প্রথম পর্ব সম্প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু বিতর্কের পরই বুধবার সেটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ২৪ জানুয়ারি এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব সম্প্রচারিত হওয়ার  কথা রয়েছে। এই ডকু সিরিজের দ্বিতীয় পর্বে কী বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়েছে? জানা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সেই সময়ের ঘটনা প্রবাহ এই দ্বিতীয় পর্বে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি যবে থেকে প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন এই সময়কালে সংখ্যালঘুদের প্রতি কেন্দ্রের মনোভাব নিয়ে অনেকেই যে সমালোচনা করে থাকেন তাও এই সিরিজে দেখানো হবে বলে খবর। এরপরই দেশের বাইরে থাকা ভারতীয়রা এই ডকুমেন্টরি সিরিজের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে রামি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, "ভারত যখন জি-২০ সম্মেলনের সভাপতিদের দায়িত্ব পেয়েছে ঠিক তখনই বিবিসি এই সিরিজের সম্প্রচার শুরু করেছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এই দুই দেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির দিকে এগোচ্ছে‌। এই সময় সিরিজটি দেখে আমি হতবাক। বিবিসি এই সিরিজের মাধ্যমে পুরনো দিনের ক্ষতকে খুঁচিয়ে তুলতে চাইছে। এর ফলে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সমস্যা তৈরি হবে। ঘৃণা ছড়াবে। এই তথ্যচিত্রে ভারতকে এমন ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যেভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে তকমা দেওয়া হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে মুসলিমরা এখানে যেন নিরাপদ নন। সত্যিই যদি তাই হতো, অর্থাৎ মুসলিমরা যদি ভারতে নিজেদের নিরাপদ বলে মনে না করতেন তাহলে তাঁরা এই দেশ ছেড়ে চলে যেতেন। মনে রাখতে হবে মুসলিম জনসংখ্যা নিরিখে পাকিস্তানের চেয়ে ভারতে এগিয়ে।"

এভাবেই ভারতের প্রশংসা করেছেন তিনি। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ যেভাবে তথ্যচিত্র প্রদর্শনের উপর কেন্দ্রীয় সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেটা 'সেন্সরশিপ' ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই তথ্যচিত্রটি বিভিন্ন দেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাওয়ার পর সেটি নিয়ে কি প্রতিক্রিয়া আসে সেদিকে সতর্ক নজর রেখে চলেছে কেন্দ্র।

Around The Web

Trending News

You May like