শ্রীনগর: দীর্ঘ দু বছরের অপেক্ষা শেষ। বহু প্রতিক্ষার পর শেষে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হল বার্ষিক অমরনাথ যাত্রা। প্রসঙ্গত বিগত দু বছরে করোনার বাড়বারন্তের কারণে এই তীর্থযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। কিন্তু এই বছর করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রিত থাকায় ফের সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হল অমরনাথের দরজা। জানা যাচ্ছে বৃহস্পতিবার ভোরে চন্দনওয়ারি ও বলতাল প্রেস ক্যাম্প থেকে অমরনাথের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে তীর্থযাত্রীদের প্রথম দল। গতকাল অর্থাৎ বুধবারেই এই সমস্ত বেস ক্যাম্পে তীর্থযাত্রীরা পৌঁছে গিয়েছিল। উল্লেখ্য এই বছর মোট ৪৩ দিনের বার্ষিক অমরনাথ যাত্রা। এই যাত্রা শুরু হল আজ অর্থাৎ ৩০ জুন থেকে, এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের অমরনাথ যাত্রা শেষ হবে আগামী ১১ আগস্ট। দীর্ঘ দু’বছর এই যাত্রা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় চলতি বছরের অমরনাথ যাত্রাকে কেন্দ্র করে তীর্থ যাত্রীদের মধ্যে উন্মাদনা এবং উৎসাহ তুঙ্গে। অন্যদিকে প্রশাসনিক আধিকারিকরাও মনে করছেন যেহেতু দুবছর এই যাত্রা সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল তাই এই বছর এই যাত্রায় ভক্তকুলের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পাবে।
উল্লেখ্য বুধবারেই জানা গিয়েছিল আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে অমরনাথ যাত্রা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে গতকাল ভোরে তীর্থযাত্রীদের প্রথম দলকে অমরনাথের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরের উপ-রাজ্যপাল মনোজ সিনহা। বুধবার ভোর থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই ভগবতী নগর বেসক্যাম্প থেকে অমরনাথের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তীর্থযাত্রীরা। অন্যদিকে এই যাত্রায় যাতে কোনরকম নাশকতার ঘটনা না ঘটে সেদিকে কড়া নজর রেখে তীর্থযাত্রীদের জন্য ব্যাপক জোরদার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। চলতি সপ্তাহের শুরুর থেকেই সমস্ত উপত্যকা জুড়ে যানবাহনে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এমনকি জম্মুর যে বেস ক্যাম্পগুলিতে তীর্থযাত্রীরা এসে পৌঁছেছেন সেগুলিতে অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম বসানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অন্যদিকে তীর্থযাত্রীদের যাত্রাপথে কঠোর নজরদারির জন্য মোতাইন হয়েছে একাধিক স্নাইপার।
একইসঙ্গে যাত্রীদের স্বাস্থ্য বিষয়ে নজর রাখতেও একটি বিশেষ চিকিৎসক দল বেসক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, একজন অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞসহ মোট ২৬ জনের একটি চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর দল। বেসক্যাম্পে যদি কোনও তীর্থযাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন তাদের জরুরী চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্যই এই বিশেষ চিকিৎসক দলকে মোতায়ন করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর। যাত্রার ঠিক আগেভাগে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই এই বিশেষ দল বেসক্যাম্পগুলিতে পৌঁছে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।