নিজস্ব প্রতিনিধি: বিবাহিতা বা অবিবাহিতা, পরিস্থিতির কারণে মহিলারা বাধ্য হন গর্ভপাত করাতে। যা নিয়ে বিভিন্ন সময় বহু প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে আইনের নানা ধারা তুলে প্রশ্ন উঠেছে। যা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। এবার গর্ভপাত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ শোনাল সর্বোচ্চ আদালত। অবিবাহিতাদের নির্দিষ্ট সময়ের পরেও গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া উচিত বলে মনে করে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে কোনও অবিবাহিতা যদি স্বেচ্ছায় সঙ্গমের পর অন্তঃসত্ত্বা হন তাহলে নির্দিষ্ট সময়ের পরেও তাঁর গর্ভপাতের অনুমতি পাওয়া উচিত।
‘মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি ল’ অনুযায়ী গর্ভধারণের কুড়ি সপ্তাহ পর গর্ভপাতের অনুমতি পান না অবিবাহিতারা। যদিও আদালত মনে করছে এই আইনের কারণে একজন মহিলার ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা জানিয়েছেন, এই আইনের পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। তাতে অবিবাহিতারা যাতে ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাতের অনুমতি পান সেই পর্যবেক্ষণ শুনিয়েছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, “চিকিৎসকদের অনুমতি পাওয়া গেলে অবিবাহিতারা ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত কেন গর্ভপাত করাতে পারবেন না?” সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, গর্ভপাত করাতে গেলে যদি ঝুঁকির প্রশ্ন ওঠে তাহলে বিবাহিতা বা অবিবাহিতা উভয়ের ক্ষেত্রেই ক্ষতি হতে পারে। উল্লেখ্য কিছুদিন আগে এক অবিবাহিতাকে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছিলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ওই তরুণীর গর্ভে থাকা সন্তানের বয়স ২৪ সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছিল। কি ঘটনা ঘটেছিল ওই তরুণীর জীবনে? ওই তরুণী আদালতের কাছে কাতর আবেদন জানিয়ে বলেন তিনি তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে স্বেচ্ছায় সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিলেন। একটা সময় তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু তরুণীর অভিযোগ তখন প্রেমিক তাঁকে বিয়ে করতে রাজি হননি। এই পরিস্থিতিতে তিনি সন্তানকে জন্ম দিলে তাঁর সামাজিক সম্মান নষ্ট হবে। ঘটনাটি নিয়ে ওই তরুণী দিশাহারা হয়ে পড়েন। আর সেই যুক্তি তুলে ধরে সর্বোচ্চ আদালতের কাছে গর্ভপাতের আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। তখন বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে শীর্ষ আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করে। এর পাশাপাশি শীর্ষ আদালত সেই ঘটনা সম্পর্কে আরও জানায়, ২০২১ সালে গর্ভপাত আইন সংশোধন করে স্বামীর বদলে ‘সঙ্গী’ লেখা হয়েছে। অর্থাৎ অবিবাহিতারাও যাতে গর্ভপাতের সুবিধা পান সেই কারণেই আইনটিকে বদলানো হয়েছে বলে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল। শীর্ষ আদালত মনে করে প্রগতিশীল মানসিকতার নিরিখে এই বিষয়টি নিয়ে আইন পাল্টানো প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণে আগামী দিনে পরিস্থিতির চাপে পড়া তরুণীদের গর্ভপাতের ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।