পাটনা: পেশায় একজন দিনমজুর। দিন এনে দিন খাওয়াই তার কাজ। দৈনিক গড় আয় ৫০০ টাকার বেশি কখনোই নয়। কখনো কখনো সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরে এই ৫০০ টাকাও জোটেনা। এমনই এক দিন আনা দিন খাওয়া দিনমজুরকে সাড়ে ৩৭ লক্ষ টাকার বকেয়া মেটানোর নোটিশ পাঠাল আয়কর দপ্তর। সম্প্রতি আয়কর দপ্তরের তরফ থেকে পাঠানো এই নোটিশ বিহারের খাগরিয়া জেলার বাসিন্দা গিরিশ যাদবের হাতে পৌঁছেছে। তারপরেই চক্ষু চড়কগাছ অবস্থা তাঁর। যে মানুষ সারা জীবনে এক লক্ষ টাকাও দেখেছেন কিনা সন্দেহ তার কাছেই কিনা ৩৭ লক্ষ টাকার নোটিশ! ফলে কোন উপায়ান্তর না দেখে পুলিশের দ্বারস্থই হয়েছেন গিরিশ। থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন বলে খবর। অন্যদিকে গিরিশের কাছ থেকে এমন আজব অভিযোগ পেয়ে কার্যত নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসনও। তড়িঘড়ি শুরু হয়েছে তদন্ত।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পেশায় দিনমজুর হলেও গিরিশের কাছে বৈধ প্যান কার্ড রয়েছে। আর সেই প্যান নম্বরের ভিত্তিতেই তাকে নোটিশ পাঠিয়েছে আয়কর দপ্তর। ওই নোটিশে জানানো হয়েছে গিরিশ রাজস্থানভিত্তিক একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এবং তিনি প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকার করফাঁকি দিয়েছেন। কিন্তু ওই নোটিসের কথার সঙ্গে বাস্তবের গিরিশের কোন মিলি নেই। বিহারের এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা এই গিরিশ পেট চালাতে দিল্লিতে দিনমজুরের কাজ করেন। তিনি কস্মিনকালেও রাজস্থান যাননি বলে জানিয়েছেন। দিন কয়েক আগে তিনি এক ব্যক্তিকে প্যান কার্ড বানাতে দিয়েছিলেন। সমস্ত সরকারি নথিপত্রও ওই ব্যক্তির কাছে জমা দিয়েছিলেন। যদিও এখনো পর্যন্ত সেই প্যান কার্ড তিনি হাতে পাননি, কিন্তু তার নামে রেজিস্টার হওয়া প্যান নম্বরের ভিত্তিতেই এসেছে আয়কর দপ্তরের ওই নোটিশ। ফলে গিরিশের সন্দেহ, প্যান কার্ড বানাতে যাওয়াই কাল হয়েছে। জালিয়াতির শিকার হয়েছেন তিনি।
জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই আলাওলী থানায় এই বিষয়ে লিখিত একটি অভিযোগ দয়া করেছেন ঐ দিনমজুর। তার অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে আলাউলি থানার পুলিশ আধিকারিক পুরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘গিরিশের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছি। প্রাথমিক ভাবে এটি জালিয়াতির ঘটনা বলে মনে হচ্ছে।’ অন্যদিকে পুরো বিষয়টি জানিয়ে আয়কর দফতরের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।