নয়াদিল্লি: বিশ্ব পরিবেশ দিবসে প্রতি বছরই পরিবেশ রক্ষার অঙ্গীকার নেওয়া হয়৷ কিন্তু দেখা যায় বছরভর সেই অঙ্গীকারের শিকি ভাগও পালন করা হয়নি৷ কিন্তু কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা ভবিষ্যৎকে আরও সুন্দর করে তুলতে নিঃস্বার্থভাবে অবিরাম কাজ করে চলেছেন৷ আবার কিছু নাম লেখা আছে ইতিহাসের পাতায়৷ যা প্রকৃতির প্রতি তাঁদের অবদানকেই স্মরণ করায়৷ রইল কিছু বিখ্যাত পরিবেশবিদের কথা-
যাদব পায়েং- ‘ফরেস্ট ম্যান’ যাদব পায়েং ভারতের একজন বিখ্যাত পরিবেশবিদ৷ উত্তর-পূর্বে সবুজের আবাসভূমি অসমের বাসিন্দা যাদব কয়েক দশক ধরে ব্রহ্মপুত্রের বালুচরে বৃক্ষরোপন করে গিয়েছেন৷ বলা ভালো তৈরি করেছিলেন একটি অরণ্য৷ পরবর্তীকালে তাঁর নাম যাদব মলাই পায়েং অনুসারে এই অরণ্যের নাম হয় মলাই ফরেস্ট৷ তাঁর এই কাজের জন্য পদ্মশ্রী সম্মান পান তিনি৷
ইন্দিরা চক্রবর্তী- ভারতের অপর এক বিখ্যাত পরিবেশবিদ হলেন ইন্দিরা চক্রবর্তী৷ ২০১৪ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করা হয় তাঁকে৷ পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য নিয়েও কাজ করেছেন তিনি৷ পরিবেশ রক্ষা ও জনস্বাস্থ্য নিয়ে তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসাবে একাধিক সম্মান দেওয়া হয় তাঁকে৷ এর মধ্যে রয়েছে এডৌরডো সৌমা পুরস্কার, ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল প্রিয়দর্শিনী পুরস্কার এবং ইউএসএফ গ্লোবাল লিডারশিপ পুরস্কার৷
সুন্দরলাল বহুগুণা- ভারতের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ হলেন সুন্দলাল বহুগুণা৷ তিনি ছিলেন চিপকো আন্দোলনের প্রাণপুরুষ৷ হিন্দিতে ‘চিপকো’ শব্দের অর্থ কোনও কিছুকে জড়িয়ে ধরে থাকা। গাছ কাটার বিরুদ্ধে এই অভিনব পদক্ষেপে, আন্দোলনকারীরা মানব শৃঙ্খল তৈরি করে প্রতিটি গাছ আগলে রাখতেন। তাঁদের একটাই বার্তা ছিল… গাছ কাটতে হলে আগে তাঁদের মারতে হবে। ২০০৯ সালে পদ্ম বিভূষণে সম্মানিত করা হয় তাঁকে৷
ইন্দিরা গান্ধী – ভারতের পরিবেশবিদদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন দেশের একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী৷ কড়া হাতে রাজনীতি সামলানো ইন্দিরা গান্ধী একাধারে ছিলেন একজন পরিবেশ প্রেমী৷ তিনি শুধু বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রণয়নই করেননি, বাঘ বাঁচাও অভিযানের অন্যতম যোদ্ধাও ছিলেন৷
অগাথা সাংমা- ভারতীয় সংসদের সদস্য তথা আইনজীবী অগাথা সাংমা একজন পরিবেশবিদ৷ মেঘালয়ের বাসিন্দা অগাথা সাংমা ইংলন্ডের নটিংহাম ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার ডিগ্রি করেছেন এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে৷ পরিবেশ সংক্রান্ত ইস্যুগুলির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছেন তিনি৷
মেধা পাটেকর- সমাজকর্মী ও পরিবেশবিদ মেধা পাটেকরের নাম কে না জানে৷ নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের নেত্রী তিনি৷ নদী বাঁচাতে তাঁর টানা অবস্থান বিক্ষোভ সর্বজনবিদিত। ১৯৯২ সালে গডম্যান প্রাইজ ফর এশিয়া এবং রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত করা হয় তাঁকে৷
শালুমারদা থিম্মক্কা- বিশিষ্ট পরিবেশবিদ শালুমারদা থিম্মক্কা জন্ম গ্রহণ করেন ১৯১৪ সালে৷ তিনি কর্ণাটকের একজন বিশিষ্ট পরিবেশবিদ৷ হুলিকাল এবং কুদুরের মধ্যে ৪ কিলোমিটার জুড়ে ৩৮৫টি অশ্বত্থ গাছ এবং ৮ হাজার অন্যান্য গাছ লাগিয়েছিলেন থিম্মকা৷ পড়াশোনা না জানলেও পরিবেশের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল অগাধ৷ কোনও দিন সন্তানের জন্ম দিতে পারবেন না জানার পর এক সময় আত্মহত্যাও করতে গিয়েছিলেন তিনি৷
নাসিরুদ্দিন শা- জনপ্রিয় অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শা একাধারে দাপট দেখিয়েছেন রুপোলি পর্দায়৷ অন্যদিক, রাজত্ব করেছেন মঞ্চে৷ তবে শুধু সিনেমা নয়৷ তিনি কাজ করেছেন পরিবেশের স্বার্থেও৷ তিনটি ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতে৷ সম্মানিত হয়েছেন পদ্মশ্রী এবং পদ্ম ভূষণে৷