পাটনা: ভোটে একবার নির্বাচিত হতে পারলেই ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা৷ বঙ্গে হোক বা অন্য রাজ্য, রাতারাতি বদলে যায় জনপ্রতিনিধিদের খোলনলচে৷ সুবিশাল চোখ ধাঁধানো বাড়ি৷ দামি গাড়ির লাইন পড়ে যায় বিধায়কদের বাড়ির সামনে৷ এক কথায় সকলেই কোটিপতি৷ কিন্তু সেই ভিড়ে বড্ডই বেমেনান তিনি৷ তাঁর জীবন একেবারেই সাদামাটা৷ তাঁর অর্থ নাই থাকতে পারে, কিন্তু যেটা আছে তা অমূল্য৷ তাঁর শ্রেষ্ঠ সম্পদ সততা৷ আর আমজনতা তা ভালোভাবেই জানে৷ সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে তিনি আজ পরিচিত মুখ৷ সকলেই জানে তাঁর কথা৷ তিনি বিহারের কাটিহার জেলার বলরামপুরের বিধায়ক মেহেবুব আলম৷ এই নিয়ে চতুর্থবার জয়ী প্রার্থী তিনি৷
আরও পড়ুন- নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, পাকিস্তানকে সমন পাঠাল ভারত
আর পাঁচজন বিধায়কের সঙ্গে তাঁর একেবারেই মিল নেই৷ বেশভূষা অতি সাধারণ৷ নিদেন পক্ষে একটা পাকা বাড়ি পর্যন্ত নেই৷ নিজের হাতে চাষ করেন৷ কোথাও যাওয়ার হলে পায়ে হেঁটেই চলে যান৷ দুর্নীতি ভরা রাজনীতির দুনিয়ায় তিনি সততার জলজ্যান্ত প্রতিমূর্তি৷ এই সততার জন্যই মানুষের মনে তিনি জায়গা পাকা করে নিয়েছেন৷ তাঁর কাছে জনপ্রতিনিধি কথার অর্থ মানুষের সেবা৷ মনপ্রাণ দিয়ে সেটাই করেন বলরামপুরের ৪৪ বছরের এই সিপিআই বিধায়ক৷ তাঁকে নিয়ে গর্বিত বিহার৷
আরও পড়ুন- ‘‘যারা শান্তির ভাষা বোঝে না, তাদের ‘আপনে’ ভাষাই জবাব দেওয়া হবে’’
এই বছর বিধানসভা নির্বাচনে ৫৩ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন মেহেবুব আলম৷ বিহার বিধানসভায় সবচেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী প্রার্থী একমাত্র তিনিই৷ ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে সম্পত্তির যে হলফনামা তিনি জমা দিয়েছিলেন, তাতে লেখা ছিল শূন্য৷ বাস্তবেই তাই৷ একটা কাঁচা বাড়ি, কিছু চাষের জমি ছাড়া আর কিছুই নেই তাঁর৷ জমানো পুঁজিও শূন্য৷ চাষ করেই সংসার চলে তাঁর৷ তিনি সমগ্র দেশের কাছে এক দৃষ্টান্ত৷ তাঁর মতো নেতাদের দিকে তাকিয়ে মানুষ আজও ভরসা রাখতে পারে গণতন্ত্রে৷ দুর্নীতির পাক তাঁকে ছুঁতে পারেনি৷ তিনি বাঁচেন মাথা উঁচু করে৷ তাঁর এই ব্যক্তিত্বই তাঁকে অনন্য করে তুলেছে৷