হায়দরাবাদ: আনলক ৫ থেকে স্কুল খোলার কথা জানায় কেন্দ্র সরকার। যদিও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া রাজ্যের উপরেই ছেড়েছিল কেন্দ্র। এরপরই অন্ধ্র প্রদেশ ২ নভেম্বর থেকে সমস্ত স্কুল খোলার ঘোষণা করে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন মোহন রেড্ডির জানান যে স্কুলে ৭৫০ জনের বেশি পড়ুয়া রয়েছে, সেই স্কুলগুলি সপ্তাহে তিনদিন খোলা যেতে পারে। রাজ্যের নির্দেশ পেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষও স্কুল খুলতে সম্মত হয়। আর তারপরই দেখা যায় ভয়ংকর পরিণতি। স্কুল খোলার তিনদিনের মধ্যেই একটি স্কুলেরই প্রায় ৪২২ জন পড়ুয়া করোনায় আক্রান্ত হয়।
রাজ্যের সম্মতির পর একটি সরকারি স্কুলে ২ নভেম্বর নবম এবং দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ক্লাস শুরু হয়। আর ৫ নভেম্বরের মধ্যেই স্কুলের ২৬২ জন পড়ুয়া এবং ১৬০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা করোনায় আক্রান্ত হন। অভিযোগ, একসঙ্গে এতজন পড়ুয়া ও শিক্ষক করোনা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের স্কুল কমিশন এ নিয়ে কোনও গুরুত্ব দেখায়নি। বরং স্কুল কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, রাজ্যে নবম এবং দশম শ্রেণী মোট দশ লক্ষ পড়ুয়া রয়েছে। এর মধ্যে চার লক্ষ পড়ুয়া ইতিমধ্যেই স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করছে। অন্যদিকে রাজ্যের ১ লাখ ১০ হাজার শিক্ষক রয়েছেন যাঁদের মধ্যে ৯৯ হাজার নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছেন। তাই পরিসংখ্যানের অঙ্ক বলছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা তেমন গুরুতর নয়।
কিন্তু কেন্দ্রের ঘোষণার পর যেখানে অধিকাংশ রাজ্য স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানে অন্ধ্র প্রদেশ সরকার কেন স্কুল খোলার কথা ভবল? এ নিয়ে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে যে সব আর্থিকভাবে দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ে তাদের অনলাইনে ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে তাদের পড়াশোনারও ক্ষতি হচ্ছে। সেইসব চিন্তাভাবনা করে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছাত্রাছাত্রীদের জন্যেই স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এদিকে ওই নির্দিষ্ট স্কুলে একসঙ্গে এতজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় সেটি ফের বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে খবর। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ICMR-এর তরফে জানানো হয়েছে শিশু ও কমবয়সীদের করোনার সুপার স্প্রেডার। আমেরিকার কেস স্টাডি করেই এমন সিদ্ধান্তে এসেছে তারা। কারণ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে জুলাইয়ের মাঝামাঝি আমেরিকায় স্কুল খুলেছিল। কিন্তু স্কুল খোলার মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রায় লক্ষাধিক শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ভারতে তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল আইসিএমআর। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্কুল খোলায় অনুমতি দেয় কেন্দ্র ও কয়েকটি রাজ্য। তারপরই অন্ধ্র প্রদেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সামনে এল।