তিরুঅনন্তপুরম: ‘ছিল রুমাল, হয়ে গেল একটা বেড়াল’৷ সুকুমার রায়ের সেই বিখ্যাত লাইনের মতোই ম্যাজিকের মতো বদলে গেল জীবন৷ ছিলেন শিক্ষক৷ রাতারাতি হয়ে গেলেন ঝাড়ুদার৷ কেরল সরকারের সিদ্ধান্তের নাকাল সে রাজ্যের আদিবাসী শিক্ষাকেন্দ্রগুলির ৩৪৪ জন শিক্ষক৷
আরও পড়ুন- চিন্তায় বাড়াচ্ছে মৃত্যুহার, অ্যাকটিভ কেস আপাতত নিয়ন্ত্রণেই দেশে
গত মাসের ৬ তারিখ কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সরকার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলি থেকে এক জন শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে নিয়ে চালু বহুমুখী শিক্ষাকেন্দ্রগুলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়, ওই আদিবাসী শিক্ষাকেন্দ্রগুলি বন্ধ করা হবে৷ ফলে ওই শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে কর্মরত ৩৪৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে আপাতত সরকারি সাফাইকর্মী পদে নিয়োগের করা হবে৷ এমনটাই কেরল স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর৷
তিরুঅনন্তপুরম জেলার অম্বুরি অঞ্চলের কুন্নাথুমালা বহুমুখী শিক্ষাকেন্দ্রের এমনই এক শিক্ষিকা আশা উষা কুমারী৷ সরকারি সিদ্ধান্তে তিনিও শিক্ষিকার চাকরি হারিয়েছেন৷ সরকারি নির্দেশিকায় এক রাতেই তিনি এখন সাফাইকর্মী৷ সেই পদেই তাঁকে নিয়োগ করা হবে বলে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে৷ গত শুক্রবার ছিল তাঁর শেষ ক্লাস। উষা বলেন, ‘‘এত দিন ধরে গরিব আদিবাসী পরিবারের শিশুদের লিখতে-পড়তে শিখিয়েছি৷ তাদের ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ দিয়েছি। সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুব হতাশ লাগছে।’’
তিনি জানান, প্রত্যন্ত আদিবাসী এলাকায় গড়ে ওঠা ওই শিক্ষাকেন্দ্রে পড়ানোর জন্য প্রতিদিন ১৪ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতেন তিনি। তাঁ কথায়, ‘‘যেদিন শেষ ক্লাস নিচ্ছি, সেদিন পড়ুয়ারাও বিশ্বাস করতে চায়নি যে, এটাই ওদের সঙ্গে আমার শেষ দেখা।’’
এ প্রসঙ্গে কেরল শিক্ষা সচিব মহম্মদ হানিসের বক্তব্য, ‘‘বহুমুখী শিক্ষাকেন্দ্রগুলির প্রায় ৫০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে আপাতত আর প্রয়োজন হবে না। এটাই সরকারের সিদ্ধান্ত৷ তাঁদের সাফাইকর্মী বা অন্য কোনও পদে নিয়োগ করা হবে কিনা, সে বিষয়ে এখনও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’’ তবে এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>