নয়াদিল্লি: করোনা পরিস্থিতিতে লাগাতার লকডাউনের ধাক্কায় ক্রমেই ভেঙে পড়ছে দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো৷ রাজস্ব কমতে শুরু করেছে, কিন্তু বেড়ে চলেছে সরকারের ব্যয়৷ এই অবস্থায় রাজকোষ ভরাতে কেন্দ্রকে অতি উচ্চবিত্তদের উপরে অতিরিক্ত কর বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন একদল ইন্টারনাল রেভেনিউ সার্ভিস (আইআরএস) অফিসার। বিদেশি সংস্থাগুলির উপরেও লেভি বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু গোটা বিষয়টি ফাঁস হতেই কেন্দ্রীয় সরকারের রোষের মুখে পড়েন তিন শীর্ষ আইআরএস অফিসার। সোমবার ওই তিন অফিসারকে চার্জশিট দেয় অর্থ মন্ত্রক৷
অভিযুক্ত তিন আইআরএস অফিসার হলেন, সঞ্জয় বাহাদুর, প্রকাশ দুবে এবং প্রশান্ত ভূষণ৷ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত জবাব পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের৷ পাশাপাশি এই অফিসারদের পদ থেকেও সরিয়ে দেখা হয়েছে বলে সূত্রের খবর৷ সরকারকে পেশ করা প্রস্তাবপত্র প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন এই তিন আইআরএস অফিসার৷ প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দুবে এবং বাহাদুর জুনিয়র অফিসারদের এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সরকারি অনুমোদন ছাড়াই বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন ভূষণ৷
ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে ‘FORCE (Fiscal Options & Response to COVID-19 Epidemic)’ নামে ওই প্রস্তাব পেশ করা হয় সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডায়রেক্ট ট্যাক্সেস (সিবিডিটি)-র কাছে। ৫০ জন জুনিয়র অফিসার এই প্রস্তাবটি তৈরি করেন৷ ওই প্রস্তাবে বলা হয়, দেশের খুব অতি উত্তবিত্তদের উপরে বেশি করে কর লাগু করা হোক। একই সঙ্গে বার্ষিক ১০ লাখ টাকার উপরে যাঁরা আয় করেন তাঁদের আয়ে বসানো হোক ‘কোভিড রিলিফ সেস’।
আইআরএস অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাব ছিল, যাঁদের বার্ষিক আয় ১ কোটি টাকার উর্ধে, জরুরি তহবিলের স্বার্থে তাঁদের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ আয়কর বসানো হোক৷ আর যাদের ৫ কোটি টাকা বা তার বেশি আয় তাঁদের ক্ষেত্রে সম্পদ কর পুনরায় লাগু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়৷ তবে এটি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সাময়িক ব্যবস্থা বলেও উল্লেখ করা হয়৷ কিন্তু বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই শোরগোল বাধে। প্রস্তাবটি খারিজ করে দেয় অর্থ মন্ত্রক। এই প্রস্তাবকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যায়িত করে সরকার। প্রাথমিক তদন্তে এই ঘটনায় জড়িত তিন আধিকারিককে চিহ্নিত করার পাশাপাশি ৫০ জন জুনিয়র অফিসারের কাছ থেকেও জবাব তলব করেছে কেন্দ্র৷ তাঁদের কাছ থেকে লিখিত জাবাব আদায় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেন্টার বোর্ড অফ ডায়রেক্ট ট্যাক্সেস-এর চেয়ারম্যানকে৷