নয়াদিল্লি: ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের বাড়ির নিরাপত্তাতেই রয়েছে গলদ। এই অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই দোভালের বাড়ির নিরাপত্তায় থাকা তিন কমান্ডোকে বরখাস্ত করা হল। এছাড়াও আরো দুজন সিনিয়র অফিসারকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে বলে খবর। বুধবার এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজধানী দিল্লিতে। যেখানে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাই নিরাপদ নন সেখানে দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে একাধিক প্রশ্ন।
তবে এই ঘটনা সাম্প্রতিককালের নয়। জানা যাচ্ছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎই ডোভালের বাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়ে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। যদিও বাড়ির মধ্যে প্রবেশের আগেই তাঁকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে দোভালের বাড়ির নিরাপত্তায় থাকা সিনিয়ার পুলিশ অধিকারিকরা। তবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল আগন্তক ওই ব্যক্তির বয়ানে। কারণ জেরার মুখে পড়ে ওই ব্যক্তি দাবি করেছিলেন তাঁর শরীরে চিপ বসানো রয়েছে। দূরে থেকে কেউ ওই চিপের মাধ্যমে তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তির শরীর ভালো করে স্ক্যান করে দেখা হয়। কিন্তু তাতে সন্দেহজনক কোন কিছুই মেলেনি। এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দীর্ঘক্ষণ জেরার পর পুলিশ বুঝতে পারে যে সে মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু এই ঘটনার পরেই মাথাচাড়া দিয়েছিল একগুচ্ছ প্রশ্ন। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন খোদ নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিরাপত্তাতেই যখন এত ফাঁক রয়েছে তখন দেশের সাধারণ মানুষ কতটা নিরাপদ। এরপর এই বিষয়টির শুনানি শুরু হয় সিআইএসএফের আদালতে এবং এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন তিনজন কমান্ডো এবং দুজন সিনিয়র অফিসার। তাঁদেরই বুধবার বরখাস্ত করা হয়েছে এবং বদলি করা হয়েছে দুজন সিনিয়র অফিসারকে।
উল্লেখ্য, দোভালকে জেট ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দিয়েছে কেন্দ্র। গত বছরেই এক পাক পুষ্ট জঙ্গি গ্রেফতারের পর দাবি করেছিল যে সে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বাড়িতে রেকি করেছিল। তার ওপর ভিত্তি করে হামলার একটি ব্লু প্রিন্টের ছকও কষে ফেলা হয়েছিল। তার সেই স্বীকারোক্তি সামনে আসতেই রীতিমতো নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। সঙ্গে সঙ্গে দোভালের বাড়িতে নিরাপত্তা বসানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তারপরেও নিরাপত্তাতে ছিল এত ফাঁক।